শেন ওয়ার্ন এবং রড মার্শের সাম্প্রতিক মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই আবারো শোকের সাগরে ভাসছে ক্রিকেট বিশ্ব৷ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার অজি তারকা অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস।
সাইমন্ডস কুইন্সল্যান্ডে নিজ গাড়ি চালাচ্ছিলেন।পুলিশের দেয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, রাত ১১টার দিকে হার্ভে রেঞ্জ রোডের উপর দিয়ে গাড়িটি যাচ্ছিল। অ্যালিস রিভার ব্রিজের কাছে বাম দিক নেওয়ার সময় গাড়িটি উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ৪৬ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান এই ক্রিকেটার এবং তাঁর একমাত্র সহযাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু৷ কোন লাভ হয় নি, সেখানেই মারা যান সাইমন্ডস। গুরুতর আঘাত ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। ১৯৯৮ সালে অজিদের জার্সিতে অভিষিক্ত সাইমন্ডস অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬টি টেস্ট, ১৯৮টি একদিনের ম্যাচ এবং ১৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। দু’বার বিশ্বকাপও জিতেছিলেন তিনি।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে গোটা ক্রিকেট বিশ্বে। চলতি বছরে তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারের মৃত্যুর খবর এল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান লালচান হেন্ডারসন তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট আরো একজন সময়ের সেরা ক্রিকেটারকে হারাল। অ্যান্ড্রু অত্যন্ত প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন যার সাহায্যে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ সফলতা এসেছিল এবং কুইন্সল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে।’
সাইমন্ডসের আকস্মিক মৃত্যুতে হতবাক সবাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে শোকের মাতম। অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের প্রাক্তন সতীর্থ এবং সহকর্মী ধারাভাষ্যকার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট লিখেছেন, ‘প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।’ সাইমন্ডসের আরেক প্রাক্তন সতীর্থ জেসন গিলেস্পি ট্যুইট করেছেন, ‘নাড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়ঙ্কর খবর! আমি পুরোপুরি বিধ্বস্ত। আমরা সবাই তোমাকে মিস করব বন্ধু।’
পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারও জানিয়েছেন অ্যান্ড্রুর আকস্মিক মৃত্যুর খবরে তিনি ‘বিধ্বস্ত।’ ‘মাঠে এবং মাঠের বাইরে আমাদের দুর্দান্ত সম্পর্ক ছিল। অ্যান্ড্রুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং প্রার্থনা জানাই’, টুইট করেছেন শোয়েব।
১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ড এ দলে নির্বাচিত হয়ে খেলার অফার ফিরিয়ে দেন। তিন বছর পর তার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক হয়। চাইলেই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পারতেন তিনি৷ ১৯৮টি ওয়ানডে খেলা সাইমন্ডস এই ফরম্যাটে ৫০৮৮ রানের মালিক, গড় যেখানে ৪০। ৬টি সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৯২ স্ট্রাইক রেটে। শিকার করেছেন ১৩৩টি উইকেট।
একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দলে অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন সাইমন্ডস। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি কম খেললেও ওয়ানডে খেলে নিজেকে নিয়ে যান অন্য কাতারে।