পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড (৪র্থ টি২০) – হাইলাইটস
করাচিতে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানের দেয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৯.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এ ম্যাচ জিতে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-২ সমতায় ফিরল স্বাগতিকরা।
অথচ এ ম্যাচ জিতে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ইংলিশদের। ম্যাচ জয়ের নায়ক বনে যাওয়ার কথা ছিল আট নাম্বারে ব্যাট করতে নামা লিয়াম ডসনের। মঈন আলির পর হ্যারি ব্রুক যখন সাজঘরে ফেরেন তখন ৩৪ বলে ইংলিশদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫৪ রান। ক্রিজে আসা ডেভিড উইলি ও লিয়াম ডসন দুজনই বোলার। ফলে তখনই একপ্রকার পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু ডসন উইকেটে এসে খেললেন অতি মানবীয় এক ইনিংস। উইলি যখন ১০ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরেন তখনো ইংলিশদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১ বলে ৩৭ রান। ৬ বলে ৬ রান নিয়ে ক্রিজে ডসন। তাকে সঙ্গ দিতে মাঠে নামেন আদিল রশিদ। তাঁকে অপরপ্রান্তে রেখে, ইনিংসের ১৮তম ওভারে আসা মোহাম্মদ হাসনাইনকে একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন ডসন।
নো বলসহ প্রথম চার বলে তুলে নেন ২৩ রান। ওভারের শেষ বলে এক রান নিয়ে আবার ফেরেন স্ট্রাইক প্রান্তে। প্রথম বলে সুবিধা করতে না পারলেও, দ্বিতীয় বলে হারিস রউফকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন ডসন। ইংলিশদের ড্রেসিংরুমে তখন খেলয়াড়দের চোখে মুখে দেখা যাচ্ছিল খুশির হাতছানি।
কিন্তু পরের বলেই ঘটল বিপত্তি। ১০ বলে ৫ রান প্রয়োজন এমন সময় হারিসের বাউন্স ডেলিভারি বাউন্ডারির উদ্দেশ্যে হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন ডসন। আগের ১০ ম্যাচে ২৩ রান করা ডসন এদিন ৫ চার ও এক ছক্কায়, ১৭ বলে করেন ৩৪ রান।
তার বিদায়ের পরের বলেই বোল্ড আউট হন অলি স্টোন। ম্যাচের ভাগ্য তখনো দুই দিকেই ঘুরছিল। কিন্তু শেষ ওভারে তাড়াহুড়া করে রান নিতে গিয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হন রিস টপলি। আর তাতে ৩ রানের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।
এর আগে টপ অর্ডারদের ব্যর্থতায় ইংলিশদের পক্ষে বেন ডাকেট ২৪ বলে ৩৩, হ্যারি ব্রুক ২৯ বলে ৩৪ এবং মঈন আলি ২০ বলে ২৯ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে ৩২ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন হারিস রউফ। এছাড়া মোহাম্মদ নওয়াজ ৩টি, মোহাম্মদ হাসনাইন ২টি এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ১টি উইকেট তুলে নেন।
এদিন ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ২০০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার নজির স্থাপন করে পাকিস্তান। এর মধ্যে ১২২টি ম্যাচেই পাকিস্তান জয় পেয়েছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার তালিকায় দুইয়ে রয়েছে ভারত। ১৮২ ম্যাচ খেলে ভারত জিতেছে ১১৬টিতে।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৮৮ রানের ওপর ভর করে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ৬৭ বলে ৯ চার ও এক ছক্কার মারে রিজওয়ান তার ইনিংসটি সাজান। এছাড়া বাবর আজম ২৮ বল মোকাবিলায় করেন ৩৬ রান। শান মাসুদ ১৯ বলে ২১ ও আসিফ আলি ৩ বলে ১৩ রান করেন।
ইংলিশদের পক্ষে রিস টপলি ৩৭ রান দিয়ে সর্বাধিক ২টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া একটি করে উইকেট নিজেদের ঝুলিতে নেন লিয়াম ডসন ও ডেভিড উইলি। আগামী বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিরিজের ৫ম ম্যাচে এই দুই দল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে।
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ১৬৬/৪ (২০.০)
ইংল্যান্ড – ১৬৩/১০ (১৯.২)
ফলাফল – পাকিস্তান ৩ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – হারিস রউফ
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেট রক্ষক), শান মাসুদ, খুশদিল শাহ, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নওয়াজ, উসমান কাদির, আসিফ আলী, হারিস রউফ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, এবং মোহাম্মদ হাসনাইন। |
ইংল্যান্ড | মঈন আলী (অধিনায়ক), ফিলিপ সল্ট (উইকেট রক্ষক), অ্যালেক্স হেলস, উইল জ্যাকস, হ্যারি ব্রুক, ডেভিড উইলি, বেন ডকেট, লিয়াম ডসন, অলি স্টোন, আদিল রশিদ এবং রিস টপলি। |