জিম্বাবুয়ে বনাম ভারত (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে টানা দুই ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে জিম্বাবুয়েকে সিরিজ জিতেয়েছিল সিকান্দার রাজা। তবে ভারতের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরির দিনে জয় পেল না জিম্বাবুয়ে। কারণ এদিন তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৩ রানে হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের।
হারারেতে সোমবার (২২ আগস্ট) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওডিআই ম্যাচে ২৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৬ রানে থেমে যায় জিম্বাবু্য়ের ইনিংস। সেই সাথে তিন ম্যাচে ওডিআই সিরিজের সবকটি ম্যাচে পরাজিত হয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে স্বাগতিকরা।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সকালের কন্ডিশনে শুরুতে একটু সমস্যা হয়েছে ভারতের অধিনায়ক ও ওপেনার কেএল রাহুলের। চোট থেকে ফিরে এখনো নিজের ছন্দটা পাননি তিনি, ব্র্যাড ইভান্সের শিকার হয়ে ৪৬ বলে ৩০ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরেন।
অন্যদিকে ধাওয়ানের শুরুটা আক্রমণাত্মক হলেও রিচার্ড এনগারাভা ও ভিক্টর নিয়াউচির আঁটসাট বোলিংয়ে অস্বস্তিতে পড়েন। ১৭ রানে জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। আউট হন ৬৮ বলে ৪০ রান করে। রাহুলের মতো ধাওয়ানকেও সাজঘরে ফেরান ইভান্স।
তিনে নেমে পুরো ইনিংসের গল্পটাই নিজের করে নেন শুবমান গিল। ইশান কিশানের সঙ্গে ১২৭ বলে ১৪০ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলেন। এ জুটিতে শুরু থেকেই রান তোলার কাজটা করেন মূলত গিলই।
ইনিংসের শুরু থেকেই থেকেই নড়বড়ে ছিলেন কিশান। তবে ৩২ তম ওভারে রাজাকে টানা দুই চার মেরে খোলস ছেড়ে বের হন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। একপ্রান্ত আগলে রেখে ৮২ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে নেন গিল। অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা খোলস ছেড়ে বের হতে না পারায় গিলের ৯৭ বলে ১৩০ ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৮৯ রানে থামে ভারত।
জবাবে টানা তৃতীয় ম্যাচে শুরুতে উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম আঘাতটা করেন কুলদ্বীপ যাদব। এরপর ইনোসেন্ট কাইয়াকে তুলে নেন দীপক চাহার। পাঁচে নামা সিকান্দার রাজা উইকেটে এসে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তাঁর আগে শন উইলিয়ামস ফিরেছেন ৪৫ রান করে। অধিনায়ক চাকাভাও ফেরেন ১৫ রানে। কিন্তু এদিন জিম্বাবুয়ের হয়ে ব্যাট হাতে লড়াইটা একাই চালিয়েছিলেন সিকান্দার রাজা।
বোলিংয়ে দারুণ করা ইভান্সের সঙ্গে নবম উইকেট জুটিতে ৭৭ বলে ১০৪ রান তুলেন রাজা। যার সুবাদে ১২ বছর পর ওয়ানডেতে ভারতকে হারানোর স্বপ্নও দেখতে শুরু করে জিম্বাবুয়ে। রাজা হাঁকিয়ে নেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। এ নিয়ে ওডিআইতে নিজের শেষ ছয় ইনিংসে তিনটি সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তিনি। ৯৫ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ১১৫ রান। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার।
কিন্তু টানা দুই ওভারে ইভান্স (৩৬ বলে ২৮) ও রাজা সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর জিম্বাবুয়েও জয়ের পথ থেকে ছিটকে পড়ে। জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য যখন ৯ বলে ১৫ রান প্রয়োজন তখন রাজাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে ভারতকে হার থেকে থেকে রক্ষা করেন শার্দুল ঠাকুর।
ভারতের পেসার আবেশ খান ৬৬ রানে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া দীপক চাহার, কুলদীপ যাদব ও অক্ষয় প্যাটেল ২টি করে এবং শার্দুল ঠাকুর ১টি উইকেট তুলে নেন। ম্যাচে এবং সিরিজ জুড়ে অসাধারণ পারফর্ম করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ এবং প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন শুবমান গিল।
জিম্বাবুয়ে বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড
জিম্বাবুয়ে – ২৮৯/৮ (৫০.০)
ভারত – ২৭৬/১০ (৪৯.৩)
ফলাফল – ভারত ১৩ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – শুবমান গিল
প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – শুবমান গিল
জিম্বাবুয়ে বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ
জিম্বাবুয়ে | রেজিস চাকাভা (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), তাকুদজোয়ানাশে কাইতানো, শন উইলিয়ামস, ইনোসেন্ট কাইয়া, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল, লুক জংওয়ে, টনি মুনিওঙ্গা, ব্র্যাড ইভান্স, রিচার্ড এনগারাভা এবং ভিক্টর নিয়াউচি। |
ভারত | কেএল রাহুল (অধিনায়ক), সঞ্জু স্যামসন (উইকেট রক্ষক), শিখর ধাওয়ান, শুবমান গিল, দীপক হুডা, ইশান কিশান, অক্ষর প্যাটেল, দীপক চাহার, শার্দুল ঠাকুর, কুলদীপ যাদব, এবং আবেশ খান। |