শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া এর ম্যাচ হাইলাইটস
৩০ বছর পর ঘরের মাঠে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে জয় পেল শ্রীলঙ্কা। সেই জয়টাও আবার এসেছে শেষ ওভারে। রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ের পর অসিদের ৪ রানে হারিয়েছে লঙ্কানরা।
কলম্বোর আর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ ওভারে ২৫৮ রান করে অলআউট হয়েছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। জবাবে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ২৫৪ রানে থেমে যায় অসিদের ইনিংস।
এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লঙ্কানরা। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করেছিল তারা।
টসে জিতে অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ফিল্ডিং করার সিধান্ত নেন এবং শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিং করতে পাঠান। ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৪ রানের মধ্যে তিন টপঅর্ডার ব্যাটার- নিরোশান ডিকভেলা (১), কুশল মেন্ডিস (১৪) এবং পাথুম নিশাঙ্কাকে (১৩) হারিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি পাওয়া চারিথ আসালাঙ্কা।
চতুর্থ উইকেটে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ১০১ রানের জুটি গড়েন আসালাঙ্কা। ধনঞ্জয়া ৭ বাউন্ডারিতে ৬১ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে ২৭তম ওভারে সাজঘরে ফিরে গেলেও বাকি সময় দলকে টেনে নিয়ে গেছেন আসালাঙ্কা। ইনিংসের ১৪ বল বাকি থাকতে অবশেষে প্যাট কামিন্সের শিকার হন তিনি।
বাঁহাতি এই ব্যাটারের ১০৬ বলে গড়া ১১০ রানের ইনিংসে ছিল ১০টি চার এবং একটি ছক্কার মার। শেষদিকে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২০ বলে অপরাজিত ২১ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্যাট কামিন্স, মিচেল মার্শ এবং ম্যাথু কুহনেম্যান সর্বাধিক ২টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১টি উইকেট তুলে নেন।
২৫৯ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এক ডেভিড ওয়ার্নার ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটার তেমন সুবিধা করতে পারেননি। শুরুতেই অধিনায়ক ফিঞ্চ শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেন। এরপর দলীয় ৬৬ রানে ফিরেন মিচেল মার্শ (২৬)। দলীয় ১০১ রানে মারনাস লাবুশেনকে (১৪) হারালে কিছুটা বিপদেই পড়ে যায় সফরকারীরা।
সেখান থেকে এক প্রান্ত আঁকড়ে ধরে রেখে ছিলেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার। কিন্তু তাঁকে কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। অসিদের হয়ে অ্যালেক্স ক্যারি (১৯), ট্রাভিস হেড (২৭) এবং ক্যামেরন গ্রিন (১৩) রান পেলেও সেগুলো দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
ফলে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে পারেননি ওয়ার্নার। তাঁর এই একক লড়াইও শেষ হয়েছে আক্ষেপ নিয়ে। মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি ছুঁতে পারেননি এই অসি ওপেনার।
১২ বাউন্ডারিতে ১১২ বলে ৯৯ রান করে ওয়ার্নার যখন ধনঞ্জয়া ডি সিলভার শিকার হন, অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৭ উইকেটে ১৯২ রান। সেখান থেকে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন লোয়ার অর্ডারের প্যাট কামিন্স, ম্যাথু কুহনেম্যান।
কামিন্স ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে চামিকা করুনারত্নের বলে ৪৩ বলে ৩৫ করে আউট হন। শেষ উইকেটে প্রায় জয়ের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল অসিরা। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৯ রান। শানাকার ওভারে প্রথম পাঁচ বলে ৩ বাউন্ডারিসহ ১৪ রান নেন কুহনেম্যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ বলে তার উইকেটটি (১৫) তুলে নেন লঙ্কান অধিনায়ক।
শ্রীলঙ্কার হয়ে চামিকা করুনারত্নে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও জেফরি ভ্যান্ডারস সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মহীশ তিকশানা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ডুনিথ ওয়েলালাই এবং দাসুন শানাকা ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ও ৫ম ম্যাচে আগামী ২৪ শে জুন একই ভেন্যুতে এবং একই সময়ে এই দুই দল আবার মুখোমুখি হবে।
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া এর স্কোরবোর্ড
শ্রীলঙ্কা – ২৫৮/১০ (৪৯.০)
অস্ট্রেলিয়া – ২৫৪/১০ (৫০.০)
ফলাফল – শ্রীলঙ্কা ৪ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – চারিথ আসালাঙ্কা
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের একাদশ
শ্রীলঙ্কা | দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকভেলা (উইকেট রক্ষক), চারিথ আসালাঙ্কা, পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, চামিকা করুনারত্নে, ডুনিথ ওয়েলালাই, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, জেফরি ভ্যান্ডারসে, এবং মহীশ তিকশানা। |
অস্ট্রেলিয়া | অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেট রক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার, মারনাস লাবুশেন, মিচেল মার্শ, ট্র্যাভিস হেড, ক্যামেরন গ্রিন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড এবং ম্যাথু কুহনেম্যান। |