নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত (১ম ওডিআই) – হাইলাইটস
শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ইডেন পার্ক, অকল্যান্ডে তিনটি ওডিআই ম্যাচের ১ম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলার পর বিশাল এক লক্ষ্যও দাড় করায় ভারত। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। ফলে ১ম ম্যাচে জিতেই সিরিজ জয়ের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যায় তারা। অন্যদিকে সেই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন টম ল্যাথাম।
বৃষ্টি বিঘ্নিত টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভারতই জয় করে নিয়েছিলো। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজ শুরু হওয়ার পর প্রথম ম্যাচে ৩০০ প্লাস রান করেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হলো ভারতকে।
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে প্রথম ম্যাচে কেন উইলিয়ামসনদের কাছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারলো শিখর ধাওয়ানের দল। প্রথমে ব্যাট করে ৩০৬ রান তোলে ভারত। হাফ সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান, শুভমান গিল এবং শ্রেয়াস আয়ার।
তবুও ম্যাচ জিততে পারল না ভারত। বোলারদের ব্যর্থতাতেই মূলত হারতে হলো ভারতকে। ১৭ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ের রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। টম ল্যাথাম দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি করেন। কেনে উইলিয়ামসও সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েছিলেন। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন কিউইরা।
শুরু থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিয়েছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠালেও ধাওয়ানরা শুরু থেকেই রানে ছিলেন। ১৩ টি চারের সাহায্যে ৭৭ বলে ৭২ রান করলেন ধাওয়ান। শুভমান ৫০ রান করলেন ৬৫ বলে। সাথে মেরেছিলেন ১টি চার ও ৩টি ছয়। দু’জনে মিলে ১২৪ রানের জুটি গড়েন। তিন নম্বরে নেমে রান করলেন শ্রেয়াসও।
আগে ভারতের দুই ওপেনার দ্রুত ফিরে গেলে ভারতের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল শ্রেয়াস এবং রিশাভ পান্তের কাঁধে। শ্রেয়াস নিজের দায়িত্ব পালন করলেও ব্যর্থ হলেন পান্ত। ২ চারের সাহায্যে ২৩ বলে ১৫ রানে করার পর বোল্ড আউট হলেন তিনি। ওই ওভারেই সাজঘরে ফেরেন সূর্যকুমার। তিনি মাঠে নেমে প্রথম বলেই চার মারেন। পরের বলে রান পাননি। তৃতীয় বলেই স্লিপে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন সূর্যকুমার।
পান্ত এবং সূর্যকুমার রান না পেলেও ৪ চারের সাহায্যে ৩৮ বলে ৩৬ রান করেলেন সাঞ্জু স্যামসন। পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ভারতকে উদ্ধার করলেন তিনি এবং শ্রেয়াস। ৯৪ রানের জুটি গড়েন তারা। শেষ বেলায় ১৬ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তার ৩৭ রানের ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৩টি ছয়। তিনি না থাকলে ভারত ৩০০ রানের গণ্ডি পার করতে পারত কি না সন্দেহ। শেষ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন শ্রেয়াসও। সাউদির বলে আউট হওয়ার আগে ৪ চার ও ৪ ছয়ের সাহায্যে ৮০ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ১১ রান এক্সট্রা সহ ৩০৬ রান তোলে ভারত।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন সাউদি এবং ফার্গুসন। ১টি উইকেট নেন অ্যাডাম মিলনে। সাউদি উইকেট পেলেও ১০ ওভারে ৭৩ রান দেন। ফার্গুসন দেন ৫৯ রান।
৩০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে দুই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন (২২) এবং ডেভন কনওয়ে (২৪) অল্প রান করে আউট হয়ে যান। ড্যারিল মিচেল করেন ১১ রান। ৮৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়া নিউজিল্যান্ডকে ভাঙতে ব্যর্থ ভারত। এরপর উইলিয়ামসন এবং লাথাম সহজেই ম্যাচ বের করে নিলেন।
উইলিয়ামসন এবং টম লাথাম ২২১ রানের জুটি গড়েন। লাথাম অপরাজিত থকেন ১৪৫ রানে। ১৪৫ রান করতে তিনি খেলেছিলেন ১০৪ বল, সাথে মেরেছিলেন ১৯ টি চার এবং ৫টি ছয়। উইলিয়ামসন শতরান পেলেন না মাত্র ৬ রানের জন্য। ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তিনি ৯৮ বল খেলে ৭ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে এই রান তুলেন।
ভারতের পক্ষে উমরান মালিক অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে ২টি উইকেট নেন। একটি উইকেট পান শার্দূল ঠাকুর। কিন্তু বাকিরা কেউ উইকেট পেলেন না।
নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড
নিউজিল্যান্ড – ৩০৯/৩ (৪৭.১)
ভারত – ৩০৬/৭ (৫০.০)
ফলাফল – নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – টম ল্যাথাম
নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ
নিউজিল্যান্ড | কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), ডেভন কনওয়ে, ফিন অ্যালেন, গ্লেন ফিলিপস, ড্যারিল মিচেল, অ্যাডাম মিলনে, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন |
ভারত | শিখর ধাওয়ান (অধিনায়ক), ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), শ্রেয়াস আইয়ার, শুভমান গিল, সঞ্জু স্যামসন, সূর্যকুমার যাদব, শার্দুল ঠাকুর, ওয়াশিংটন সুন্দর, আরশদীপ সিং, উমরান মালিক, যুজবেন্দ্র চাহাল |