ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ (প্রথম টেস্ট – ২য় দিন)
অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটাও তেমন ভালো হয়নি বাংলাদেশ দলের। তবে প্রথম ইনিংসের মতো বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি টাইগাররা। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫০ রান। এখনও স্বাগতিকদের চেয়ে ১১২ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারীরা।
এর আগে দারুণ বোলিংয়ে লড়াইয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ৬৮ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ৭ উইকেট তুলে নিইয়েছিল মেহেদী হাসান এবং এবাদত হোসেন’রা। ফলে ১১২.৫ ওভারে ২৬৫ রানেই অল-আউট হয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। তবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ মাত্র ১০৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় স্বাগতিকরা ১৬২ রানের বড় লিড পেয়েছে।
বাংলাদেশের ১০৩ রানের জবাবে ৪৮ ওভারে ২ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিনের প্রথম ১৫ ওভার অনায়াসে কাটিয়ে দেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট আর এনক্রুমা বোনার। অবশেষে তাদের ১৭৫ বলে ৬২ রানের জুটিটি ভাঙেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
সাকিবের আর্ম বল বুঝতে না পেরে ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড হন বোনার। ৯৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ক্যারিবীয় এই ব্যাটার করেন ৩৩ রান। দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৭৯ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা।
বিরতি থেকে ফিরে অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট দৃঢ় ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু খালেদ আহমেদের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে মাত্র ৬ রানের জন্য তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেননি ব্র্যাথওয়েট । ২৬৮ বলে ৯৪ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে ৯টি বাউন্ডারি হাঁকান ক্যারিবীয় দলপতি।
ব্র্যাথওয়েট ফেরার পরই দ্রুত আরও দুটি উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কাইল মায়ার্সকে (৭) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান। এক ওভার পর জশুয়া দা সিলভাকেও (১) উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের ক্যাচ বানিয়েছেন এই অফস্পিনার।
ফলে ৩৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬ উইকেটে ২৩১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের চা–বিরতিতে যায় ক্যারিবীয়রা। বিরতির পর ৮ রানের মধ্যে স্বাগতিকদের আরও দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। অর্থাৎ ৪১ রানে ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আলজেরি জোসেফকে (০) মেহেদী এবং কেমার রোচকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান এবাদত হোসেন।
তবে স্বীকৃত ব্যাটার জার্মেইন ব্ল্যাকউড একটা প্রান্ত ধরে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। অবশেষে তার প্রতিরোধ ভাঙেন খালেদ। মেহেদী’র দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন ৬৩ রান করা ব্ল্যাকউড। এর পরের ওভারে মেহেদী নিজেই জেডেন সিলসকে এলবিডব্লিউ করে গুটিয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
মেহেদী হাসান ৫৯ রানে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট তুলে নেন এবাদত হোসেন এবং খালেদ আহমেদ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইতিবাচক শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়। একপ্রান্তে ধৈর্য্য ধরে খেলছিলেন জয়, তামিম ছিলেন স্বপ্রতিভ। কিন্তু দশম ওভারে আক্রমণে এসেই তামিমকে ফিরিয়ে দেন আলজারি জোসেফ।
উইকেটের পেছনে ক্যাচ হওয়ার আগে চারটি চারের মারে ৩১ বলে ২২ রান করেন তামিম। তিন নম্বরে নামানো হয় মেহেদী হাসানকে। নিজের পরের ওভারে এ ডানহাতি অলরাউন্ডারকেও ফিরিয়ে দেন জোসেফ। আউট হওয়ার আগে মাত্র ২ রান করতে পেরেছেন মেহেদী।
এরপর দিনের শেষভাগের প্রায় আধঘণ্টা সময় নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দিয়েছেন মাহমুদুল জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এ দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৫০ বলের জুটিতে আসে ১৫ রান। জয় ১৮ ও শান্ত ৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) – ১০৩/১০ (৩২.৫)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) – ২৬৫/১০ (১১২.৫)
বাংলাদেশ (২য় ইনিংস) – ৫০/২ (২০.০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জশুয়া দা সিলভা (উইকেট রক্ষক), জন ক্যাম্পবেল, রেমন রেইফার, এনক্রুমা বোনার, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, কাইল মায়ার্স, আলজারি জোসেফ, গুদকেশ মতি, কেমার রোচ এবং জেডেন সিলস |
বাংলাদেশ | সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেট রক্ষক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন এবং মোস্তাফিজুর রহমান। |