অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড (১ম ওডিআই) – হাইলাইটস
টি-টোয়েন্টি ও ওডিআই, দুই ফরম্যাটেরই বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। তবে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ জয়ের পর প্রথম তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই তাদের ৬ উইকেটে পরাজিত করেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেড ওভালে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ৯ উইকেটে ইংলিশদের ২৮৭ রানের জবাবে ১৭ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে অসিরা।
ইংলিশদের পক্ষে ডেভিড মালানের লড়াকু ইনিংসের পর অর্ধশত রান করেছেন অস্ট্রেলিয়ার টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার। ডেভিড ওয়ার্নার ৮৬, স্টিভেন স্মিথ ৮০ ও ট্রাভিস হেড ৬৯ রান করেন। অ্যারন ফিঞ্চ অবসরে যাওয়ার পর অসিদের এটি প্রথম ওডিআই। ফলে জয় দিয়েই ওডিআই অধিনায়কত্বের মেয়াদ শুরু হলো প্যাট কামিন্সের।
মেলবোর্নে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ এর ফাইনালে খেলা ইংলিশদের একাদশ থেকে এই ম্যাচে অধিনায়ক জস বাটলার ছাড়া খেলেছেন শুধুমাত্র ফিল সল্ট ও ক্রিস জর্ডান। তাই রান তাড়া করতে নেমে মোটামুটি অনভিজ্ঞ এক ইংলিশ বোলিং আক্রমণের ওপর শুরুতেই চড়াও হন অসি ওপেনার ওয়ার্নার ও হেড। এছাড়া অ্যাডিলেড ওভালে ফ্লাডলাইটের আলোয় ঠিক সেভাবে সুবিধা আদায় করতে পারেননি ইংল্যান্ডের পেসাররা।
এই জুটিদ্বয় ইংল্যান্ডকে হতাশ করে গেছে বেশ খানিকটা সময়। ২০তম ওভারে জর্ডানের বলে হেড (৫৭ বলে ৬৯ রান) স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিলে ভাঙে ১৪৭ রানের এই উদ্বোধনী জুটি।
ওয়ার্নার সেঞ্চুরির পথেই এগোচ্ছিলেন। ডেভিড উইলিকে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে স্যাম বিলিংসের হাতে ক্যাচ দিলে ৮৪ বলে ৮৬ রান করেই থামতে হয় তাঁকে। বিলিংস নেন ভালো একটি ক্যাচ, তবে সেটিকেও ছাড়িয়ে যায় বাটলারের নেওয়া পরের ক্যাচটি। অফ স্টাম্পের বাইরে ব্যাট চালিয়েছিলেন মারনাস লাবুশেন (৪), ডান দিকে ডাইভ দিয়ে মাটির একটু ওপর থেকে ক্যাচ নেন বাটলার।
৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট নেওয়া ইংল্যান্ড একটু লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল। তবে স্মিথের সঙ্গে অ্যালেক্স ক্যারির (২১) ৩৮ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়ার ওপর সেভাবে চাপ তৈরি হতে দেয়নি। লিয়াম ডসনের বলে ক্যারি ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও স্মিথের ৭৮ বলে ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংসে সহজ জয়ই নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। ক্যামেরন গ্রিন ২৮ বলে ২০ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক এবং মার্কাস স্টয়নিসের সামনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ৬৬ রানেই হারিয়ে ফেলে প্রথম ৪ উইকেট। সল্ট, জেসন রয়, জেমস ভিন্স ও বিলিংস—২০ ছুঁতে পারেননি কেউ।
লড়াইটা প্রায় একাই করতে হয়েছে মালানকে। ইংল্যান্ডের ২৮৭ রানের মধ্যে ১২৮ বলে ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেছেন এ বাঁহাতি ব্যাটার। মালানের পর ইংল্যান্ড ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ডেভিড উইলির—৪০ বলে অপরাজিত ৩৪ রান।
মালান একদিকে উইকেটে টিকে থাকলেও ইংল্যান্ড নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে। বিলিংসের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটির পর বাটলারের সঙ্গে ৫২, ডসনের সঙ্গে ৪০, জর্ডানের সঙ্গে ৪১ ও উইলির সঙ্গে মালান ৬০ রানের জুটি গড়ে তোলেন। ৬৪ বলে অর্ধ-শতক তুলে নেওয়া মালান ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক তুলে নিয়েছেন ১০৭ বলে। তাঁর ১২৪ বলের ইনিংসে ছিল ১২টি চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কার মার।
শেষে ৪৬তম ওভারে জাম্পাকে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে অ্যাশটন অ্যাগারের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মালান। এর আগে মিডউইকেটে অবিশ্বাস্য ফিল্ডিংয়ে একটি ছয় বাঁচিয়ে দেন অ্যাগার। ফিল্ডিংয়ে আজ দিনটি দাঁরুণ গেছে তাঁর। স্বাগতিকদের হয়ে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মিচেল স্টার্ক ও মার্কাস স্টয়নিস ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
১৩৪ রানের দু:সাহসিক ইনিংস খেলে পরাজিত দলের অংশ হলেও প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন মালান। আগামীকাল সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ড সিরিজের ২য় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে।
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
ইংল্যান্ড – ২৮৭/৯ (৫০.০)
অস্ট্রেলিয়া – ২৯১/৪ (৪৬.৫)
ফলাফল – অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ডেভিড মালান
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
অস্ট্রেলিয়া | প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেট রক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, ট্রাভিস হেড, মারনাস লাবুশেন, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যাশটন অ্যাগার, মিচেল স্টার্ক, ক্যামেরন গ্রিন এবং অ্যাডাম জাম্পা। |
ইংল্যান্ড | জস বাটলার (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), জেসন রয়, ডেভিড মালান, ফিলিপ সল্ট, জেমস ভিন্স, ক্রিস জর্ডান, স্যাম বিলিংস, লিয়াম ডসন, ডেভিড উইলি, ওলি স্টোন এবং লুক উড। |