অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড (১ম ওডিআই) – হাইলাইটস
গতকাল সকালে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে দারুন একটি লক্ষ্য দাড় করায় অস্ট্রেলিয়ার জন্য। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অ্যালেক্স কেরি ও ক্যামেরন গ্রিনের ঝড়ো ব্যাটিং এ জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। সেই সাথে সিরিজ জয়ের দিকে এক ধাপ এগিয়েও যায় অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে অসামান্য ব্যাটিং করে ম্যাচ সেরার খেতাব পেয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। তাদের হয়ে ডেভন কনওয়ে করেন ৬৮ বলে সর্বোচ্চ ৪৬ রান। সাথে মেরেছিলেন ৪টি চার ও ১টি ছয়। ৩ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ৪৫ রান করে কেন উইলিয়ামসন এবং ৫৭ বলে ৪৩ রান করেন টম ল্যাথাম তার সংগ্রহে ছিল ২টি চার ও ১টি ছয়। ২৬ রান করে আউট হন ড্যারিল মিচেল সাথে মেরেছিলেন ২টি চার। এছাড়া মার্টিন গাপটিল ৬ রান, মাইকেল ব্রেসওয়েল ৭ রান, জেমস নিশাম ১৬ রান, মিচেল স্যান্টনার ১৩ রান, ম্যাট হেনরি ৪ রান, লকি ফার্গুসন ৫ রান, ট্রেন্ট বোল্ট ৬ রান করেছিলেন। ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫ রান এক্সট্রা সহ শেষ পর্যন্ত ২৩২ রান সংগ্রহ করে কিউইরা।
১০ ওভারে ৫২ রান খরচায় গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নেন ৪টি উইকেট। জস হ্যাজলউড নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক এবং অ্যাডাম জাম্পা।
পুঁজিটা খুব বড় ছিল না। মাত্র ২৩৩ রানের। তবে এই পুঁজিকেও অস্ট্রেলিয়ার জন্য দুর্বোধ্য বানিয়ে ছেড়েছিল নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। তবুও শেষ রক্ষা হলো না। মিডল অর্ডারে দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত সাহসিকতায় শেষ পর্যন্ত জয় হলো অস্ট্রেলিয়ারই।
২৩৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল অসিরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ক্যামেরন গ্রিন আর অ্যাডাম জাম্পার দৃঢ়তায় ম্যাচটা ৩০ বল হাতে রেখেই ২ উইকেটে জয় করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নসের ক্যাজালিস স্টেডিয়ামে এ নিয়ে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হলো। আগের দুটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাও ১৯ বছর আগে, ২০০৩ সালে। দু্টি’ই বাংলাদেশের বিপক্ষে। ১৯ বছর পর এই মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া। জয়ের ধারাবাহিকতাই ধরে রাখলো তারা।
২৩৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ রানেই প্রথম সারির ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ করে ম্যাট হেনরি আর ট্রেন্ট বোল্টের আগুনে বোলিংয়ের সামনে খড়-কুটোর মত উড়ে যেতে থাকে অসি ব্যাটারদের উইকেট।
৬ষ্ঠ উইকেটে জুটিটা বাধেন অ্যালেক্স কেরি এবং ক্যামেরণ গ্রিন। দু’জন মিলে ১৫৮ রানের অনবদ্য জুটি গড়ে তোলেন। এই জুটিই মূলতঃ অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেন।
অ্যালেক্স কেরি আর ক্যামেরন গ্রিনের ১৫৮ রানের জুটি সত্ত্বেও ম্যাচ শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যায়। কারণ, ২০২ রানের মাথায় অ্যালেক্স কেরি আউট হয়ে যাওয়ার পর ২০৭ রানের মধ্যে আরও ২ উইকেটের পতন ঘটে। অর্থ্যাৎ, ৫ উইকেটে ২০২ থেকে ৮ উইকেটে ২০৭ রানে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়া।
এ সময় নাটকীয় কিছু ছাড়া জয় যেন অসম্ভবই মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। সেই অসম্ভব কাজটাই করলেন ক্যামেরন গ্রিন এবং অ্যাডাম জাম্পা। ৯ম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পা এবং ক্যামেরন গ্রিন মিলেই ম্যাচ শেষ করে দেন। ৯২ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্রিন। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মারও মারেন তিনি। অ্যাডাম জাম্পা অপরাজিত থাকেন ১৩ বলে ১৩ রান করে।
৯৯ বলে ৮৫ রান করে আউট হন অ্যালেক্স কেরি। ৮টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
ট্রেন্ট বোল্ট ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকটে নেন ম্যাট হেনরি এবং লকি ফার্গুসন।
অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া – ২৩৩/৮ (৪৫)
নিউজিল্যান্ড – ২৩২/৯ (৫০)
ফলাফল – অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ক্যামেরন গ্রিন
অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
অস্ট্রেলিয়া | অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যালেক্স কেরি (উইকেটরক্ষক), স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, মারনাস লাবুসচেন, মার্কাস স্টয়নিস, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল স্টার্ক, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজেলউড |
নিউজিল্যান্ড | কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল, মার্টিন গাপটিল, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, মাইকেল ব্রেসওয়েল, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট |