
তালেবান শাসন আমলে আফগানিস্তানে মেয়েদের ক্রিকেট নিষিদ্ধ করায় আফগানিস্তানের ছেলেদের বিপক্ষে ক্রিকেট না খেলার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর এরপরেই দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে বাকযুদ্ধ। অস্ট্রেলিয়ার বিগব্যাশে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রশিদরা। তবে কেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে না তার পক্ষে এবার যুক্তি দিতে শুরু করল অস্ট্রেলিয়া। ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে ক্রিকেটে বিশ্বে। নেটিজেনদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গে কথা বলেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একপ্রকার বাধ্য হয়েই আফগানিস্তানের বিপক্ষে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কর্তা নিক হকলে এ বিষয়ে কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ” আফগানিস্তানের সাথে না খেলার সিদ্ধান্তর ব্যাপারটা সহজ ছিলোনা। মানুষের অধিকারের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। খুব কঠিন এবং দুঃখজনক পরিস্থিতি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে না খেলার পেছনে অবশ্যই শক্ত কারন আছে, সিদ্ধান্তটা আমরা অযথাই নেই নাই। অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। এরপর আফগানিস্তানের সাথে না খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিকলে আরো বলেন ” আমরা ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। আফগানিস্তানের সঙ্গেও আমরা সব সময় খেলতে চাই। আমরা চাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রিকেট ছড়িয়ে যাক সারা বিশ্বে। কিন্ত তালেবান সরকার ঘোষণা দিয়ে নারীদের ক্রিকেট বন্ধ করে দিয়ে ক্রিকেটের ক্ষতি করেছে৷ বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য এটা ভালো বার্তা নয়। প্রতিবাদ হওয়ার দরকার ছিলো। ক্রিকেটের স্বার্থেই আমরা তাই বাধ্য হলাম তাদের বিরুদ্ধে না খেলার সিদ্ধান্ত নিতে। অস্ট্রেলিয়া সরকার এই ব্যাপারে অবগত আছে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিগব্যাশে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন রশিদ খান। টুইটারে তিনি লেখেন, ” জাতি হিসেবে আমরা ক্রিকেট পছন্দ করি, এটা আফগানিস্তানের একমাত্র আশা। ক্রিকেটকে কোন কিছুর সাথে মেশানো উচিৎ না, রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত। অস্ট্রেলিয়া আমাদের সঙ্গে খেলবেনা জেনে আমি হতাশ। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নামা যদি অস্ট্রেলিয়ার জন্য এতই যদি অস্বস্তির হয়, তাহলে আমি বিগব্যাশ খেলতে গিয়ে কোনও অস্বস্তি বাড়াব না। তাই ভবিষ্যতে বিগ ব্যাশে লিগে না ও খেলতে পারি। আফগান পেসার নবীন উল হকও বিগ ব্যাশে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে টুইটে লিখেন, ” আমাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্ত মানা কঠিন, তাই প্রতিবাদে বিগ ব্যাশ লিগে আর খেলব না। ক্রিকেট এর সাথে এমন সিদ্ধান্ত যায়না, অস্ট্রেলিয়ার আচরণ শিশুসুলভ। এর আগেও অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তানের সাথে টেস্ট খেলেনি ওরা। আমরা কঠিন একটা সময় পার করেছি, দেশের একমাত্র আনন্দের জায়গা ক্রিকেট। সেটাও কেড়ে নিচ্ছে এরা। ভীষণ দুঃখজনক ব্যাপার। “
এর আগে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তান – অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে নাম তুলে নেওয়ায় ইতোমধ্যেই এই সিরিজের ৩০ পয়েন্ট পেয়ে গেছে আফগানিস্তান। কারণ এই একদিনের সিরিজ আইসিসির ওডিআই লিগের সূচির অংশ। এদিকে নারীদের পড়াশোনা, চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিরোধিতাই মূলত করেছে অস্ট্রেলিয়া। গত বছর তালেবান সরকার ক্ষমতা পাওয়ার পরেই মূলত বিভিন্ন নিয়ম কানুন চালু হয়েছে আফগানিস্তানে। যদিও অস্ট্রেলিয়া এর বিরোধিতা করায় আফগান ক্রিকেটাররাও একে একে বিগব্যাশ বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে।