BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

আইপিএল ২০২৩: সেরা ৫ ব্যক্তিগত ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স

 আইপিএল ২০২৩: সেরা ৫ ব্যক্তিগত ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স

#image_title

Rinku Singh. (Photo Source: IPL/BCCI)

৭৪ ম্যাচের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরে অবশেষে ২৯শে মের গভীর রাতে আইপিএল ২০২৩-এর বিজয়ী দলের নাম জানা গেছে। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংস আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে গুজরাত টাইটান্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চমবারের জন্য শিরোপা অর্জন করেছে।

এই সংস্করণে সর্বাধিকবার ২০০+ স্কোর উঠতে দেখা গেছে এবং বেশ কিছু ব্যাটার এমন ইনিংস খেলেছেন যা আইপিএলের ইতিহাসে সংরক্ষিত থেকে যাবে। ব্যাটিং দক্ষতা দিয়ে ক্রিকেট অনুরাগীদের মুগ্ধ করে রাখা বেশ কিছু ইনিংস নিয়ে আলোচনা করা হল। আলোচনার জন্য শুধুমাত্র সেই ইনিংসগুলিই বিশ্লেষিত হয়েছে, যেগুলির জন্য সেইসব ব্যাটারদের দল জয়ী হয়েছিল সেই ম্যাচে।

সেরা ৫ ব্যক্তিগত ইনিংস

৫) সূর্যকুমার যাদব ১০৩* (৪৯) বনাম গুজরাত টাইটান্স

Suryakumar Yadav. ( Photo Source: BCCI/IPL )

৫৭তম ম্যাচে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও গুজরাত টাইটান্স মুখোমুখি হয়েছিল। টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা বোলিং লাইন-আপ ছিল গুজরাত টাইটান্সের এবং সেই বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধেই সূর্যকুমার যাদব তাঁর আইপিএল কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি অর্জন করেছিলেন।

টসে হেরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমেছিল এবং তাদের ওপেনিং জুটি ৬.১ ওভারে ৬১ রান তোলার পরে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে আসেন ‘স্কাই’। ইনিংসে তখন ১৪ ওভারেরও কম সময় বাকী এবং প্রতিপক্ষে রয়েছেন মহম্মদ শামি, মোহিত শর্মা ও রাশিদ খান, যাঁরা আইপিএল ২০২৩-এর শেষে শীর্ষ তিন উইকেটশিকারী ছিলেন।

তাঁর বিস্তৃত শটের প্রদর্শন করে সূর্যকুমার টাইটান্সের বোলারদের যাবতীয় আক্রমণ ভোঁতা করে দেন। রাশিদ খান মুম্বাইয়ের বাকী ব্যাটারদের বিরুদ্ধে তাঁর জাদুকরী স্পেল চালিয়ে গেলেও, সূর্যকুমারের আগ্রাসী ইনিংস থামাতে পারেননি। শেষ অবধি ৪৯ বলে ১০৩* রান করে মুম্বাইকে ২১৮/৫ স্কোরে পৌঁছে দেন আধুনিক দিনে টি-২০ ফর্ম্যাটের অন্যতম সেরা ব্যাটার।

৪) যশস্বী জয়সওয়াল ৯৮* (৪৭) বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স

Yashasvi Jaiswal. (Image Source: IPL/BCCI)

ইডেন গার্ডেন্সের মতো ব্যাটার সহায়ক পিচে কলকাতা নাইট রাইডার্স যখন মাত্র ১৪৯/৮ স্কোর করেছিল ২০ ওভারের শেষে, তখন মনেই হয়েছিল যে জয়ের জন্য এই রান যথেষ্ট হবে না। তবে রান তাড়া করতে নেমে যশস্বী জয়সওয়াল যে তাণ্ডব দেখিয়ে মাত্র ১৩.১ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেন রাজস্থান রয়্যালসকে, তা বোধহয় প্রত্যাশিত ছিল না।

রয়্যালসের ব্যাটিং ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসেছিলেন নীতীশ রানা। সেই ওভারে ২৬ রান তুলে যশস্বী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি ভিন্ন মেজাজে এসেছেন। আগ্রাসন বজায় রেখে বাঁ-হাতি ব্যাটার মাত্র ১৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন, যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম।

নাইটদের কোনো বোলারই ২১ বছর বয়সী ব্যাটারের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাননি এবং ৪১ বল বাকী থাকতেই যশস্বী দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছিলেন ৪৭ বলে ৯৮* রান করে। তাঁর ইনিংসে ১২টি চার ও ৫টি ছয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

৩) নিকোলাস পুরান ৬২ (১৯) বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর

Nicholas Pooran. (Photo Source: IPL/BCCI)

এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আয়োজিত আইপিএল ২০২৩-এর ১৫তম ম্যাচে ২১৩ রানের বিশাল লক্ষ্য ছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)-এর সামনে। ১০.৪ ওভারে ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরে আরও চাপে পড়ে গিয়েছিল এলএসজি। তবে সেই পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে নেমে নিকোলাস পুরান যে পাওয়ার-হিটিংয়ের প্রদর্শন করেছিলেন, তা সমর্থকদের মনে থেকে যাবে।

পুরান ব্যাটিং করতে আসার পরের ওভারেই অধিনায়ক কেএল রাহুলও আউট হয়ে যান এবং জয়ের জন্য এলএসজির প্রয়োজন ছিল ৫৩ বলে ১০৮ রান, হাতে ৫ উইকেট। প্রয়োজনীয় রান রেট বারোরও বেশী। সেই সময়ে মহম্মদ সিরাজ ও ওয়েন পার্নেল দুটি করে উইকেট নিয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন।

তবে প্রতিপক্ষের যাবতীয় আক্রমণকে স্তিমিত করে দিয়ে পুরান দেখিয়ে দিয়েছিলেন কেন তাঁর জন্য ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল সুপার জায়ান্টস। ৪টি চার ও ৭টি ছক্কা হাঁকানোর পরে পুরান যখন আউট হচ্ছেন, তখন লখনউকে ওভারপ্রতি আট রান করতে হত। নাটকীয় ম্যাচে শেষ অবধি ১ উইকেটে জিতেছিল এলএসজি।

২) রিঙ্কু সিং ৪৮* (২১) বনাম গুজরাত টাইটান্স

Rinku Singh. (Photo Source: IPL/BCCI)

রাশিদ খানের হ্যাট-ট্রিকের পরে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)-এর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১ বলে ৫০ রান, হাতে ৩ উইকেট। প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারদের মধ্যে কেবল ছিলেন রিঙ্কু সিং। এদিকে তখনও মহম্মদ শামি, জশ লিটলের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা বোলারদের ওভার বাকী রয়েছে। ফলে কেকেআরের জয় অসম্ভাব্য মনে হচ্ছিল।

পরবর্তী ১৩ বলে মাত্র ১১ রান উঠেছিল। লিটলের করা ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে যথাক্রমে একটি ছয় ও চার মেরে রিঙ্কু খানিক আশা আলো জ্বালিয়েছিলেন। শেষ ওভার যখন শুরু হচ্ছে, তখন কেকেআরকে করতে হত ২৯ রান। যশ দয়ালের করা সেই ওভারের প্রথম বলে উমেশ যাদব এক রান নেন এবং স্ট্রাইকে আসেন রিঙ্কু।

এরপরে যে অভাবনীয় ব্যাটিংয়ের নমুনা দেখিয়েছিলেন রিঙ্কু, তার জন্য প্রস্তুত ছিল না কেউই। পরপর পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে অতিমানবিক ব্যাটিং প্রদর্শন করেছিলেন বাঁ-হাতি ব্যাটার। যেখানে মনে হয়েছিল প্রায় তিন ওভার আগেই কেকেআর হেরে গেছে, সেখানে রিঙ্কুর অনবদ্য ইনিংসের পরে ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছিল কেকেআর।

৫) শুবমান গিল ১২৯ (৬০) বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

Shubman Gill. (Photo Source: BCCI/IPL)

প্রথম কোয়ালিয়াফায়ারে হারার পরে গুজরাত টাইটান্স দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। পাওয়ারপ্লেতে ভালো শুরু হলেও, ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরের ওভারেই আউট হয়ে যান।

সেই ম্যাচের আগের তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতে সেঞ্চুরি পাওয়া শুবমান গিল ছন্দে ছিলেন। সেই ভালো শুরু করে পুঁজি করে ২৩ বছর বয়সী ব্যাটার চোখধাঁধানো ইনিংস খেলতে থাকেন। নরেন্দ মোদী স্টেডিয়ামের বড় বাউন্ডারি তাঁর ছক্কার প্রদর্শনীতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

৭টি চার ও ১০টি ছক্কায় সমৃদ্ধা ৬০ বলে ১২৯ রানের ইনিংসের পরে গিল বেশ কিছু রেকর্ড ভেঙেছিলেন। আইপিএল প্লে-অফের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের রেকর্ড নিজের নামে করার পাশাপাশি আইপিএল ২০২৩-এর অরেঞ্জ ক্যাপের লড়াইয়ে ফাফ ডু প্লেসিকে টপকে যান। টুর্নামেন্টের শেষে গিলেরই দখলে ছিল অরেঞ্জ ক্যাপ।

The post আইপিএল ২০২৩: সেরা ৫ ব্যক্তিগত ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স appeared first on CricTracker Bengali.

Exit mobile version