আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ৩৬ বছরের অবসান ঘটিয়েছে আর্জেন্টিনার রোজারিওর সেই খুদে জাদুকর। শিরোপা খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা এখন তার হাত ধরেই তার আর্জেন্টিনার মাটিতে। ফুটবল বিশ্বে বাঁ পায়ের জাদু দিয়ে ফুটবলের এমন কোনো অর্জন নেই যা তার কাছে নেই। অধরা ছিল এই বিশ্বকাপ, সেটাও অবশেষে তার কাছে। গোটা ফুটবল বিশ্বে এখন তিনি রাজ করছেন। তিনি আর কেউ নন, আর্জেন্টিনার রোজারিওর সেই ছোট্ট লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।
আর্জেন্টিনার ছোট্ট একটি শহর রোজারিও, যেখানে জন্ম হয়েছিল ফুটবল বিশ্বের এই সেরা ছাত্রের। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রোজারিও। মেসির শৈশব কেটেছে এই রোজারিওতে। এই শহরের ‘ লা বাজাদা ‘ এলাকায় থাকতেন তিনি। সেখানে এখন না থাকলেও রোজারিওর অলিগলিতে জড়িয়ে আছে মেসির স্মৃতি। তাইতো মেসির বিশ্বকাপ জয়ে সেজে উঠেছে ছোট্ট এই শহর।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে রোজারিও ছেড়ে এই ফুটবল জাদুকর চলে গিয়েছিলেন স্পেনের বার্সেলোনায়। কিন্তু তার অস্তিত্ব যে রয়ে গেছে এখনও। মেসির বিশ্বকাপ জয়ের পর রোজারিও শহর জুড়ে চলছে উদযাপন। আনন্দে মেতে উঠছে সেখানের বাসিন্দারা। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালের এই ঐতিহাসিক ম্যাচটি দেখতে রোজারিওর কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। ম্যাচ জিতে মেসি যখন ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন তখন ড্রাম বাজিয়ে, গান গেয়ে, রাতভর আনন্দে মেতেছিলেন তারা।
এর আগে আর্জেন্টিনার মাটিতে শিরোপা যায় সবশেষ ১৮৮৬ সালে। ম্যারাডোনার হাত ধরে সে বার বিশ্বকাপের শিরোপা যাওয়ার পর দীর্ঘ ৩৬ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের। সদ্য সমাপ্ত কাতার বিশ্বকাপের আগেও ৪ টি বিশ্বকাপে মেসি খেললেও শিরোপা এনে দিতে পারেননি। কিন্তু নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে এসে বাজিমাত করলেন রোজারিওর এই খুদে জাদুকর। রোজারিওর মানুষেরও বিশ্বাস ছিল, এবার তাদের মেসির হাত ধরেই শিরোপা আসবে তাদের ঘরে।
এদিকে গত সোমবার আর্জেন্টিনার সময় অনুযায়ী রাত ২ টা ২৪ মিনিটে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে পৌঁছায় মেসিরা। সেখানে তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য জড়ো হয় হাজার হাজার আর্জেন্টাইন। সেখানের রাস্তায় নামে মানুষের ঢল। তারা অতি আদরে বরণ করে নেয় তাদের রাজাকে। এতদিন বিশ্বকাপ না জেতায় মেসির ক্যারিয়ারে যে অপূর্ণতা ছিলো এখন আর সেটা নেই। বিশ্বকাপ জয়ে সব চুকেবুকে গেল। মেসি পেয়ে গেলেন অমরত্ব।