BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ১১ জুলাই: শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া (২য় টেস্ট – ৪র্থ দিন)

Frank Dimuth Madushanka Karunaratne, popularly known as Dimuth Karunaratne, is a professional Sri Lankan cricketer

শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া

শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া (দ্বিতীয় টেস্ট – ৪র্থ দিন)

গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়লো শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। এতোদিন ধরে যা পারেনি আর কোনো দল, সেটিই কর দেখালো লঙ্কানরা। অস্ট্রেলিয়াকে ইনিংস ও ৩৯ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করলো লঙ্কানরা।

এর আগে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে অন্তত ৩৫০ রান করার পর কখনও ইনিংস ব্যবধানে হারেনি অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু গল টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩৬৪ রান করেও দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিব্রতকর হারের মুখ দেখলো প্যাট কামিন্সের দল।

শ্রীলঙ্কার এ ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক অভিজ্ঞ ব্যাটার দিনেশ চান্ডিমাল ও অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া। দুজনই গড়েছেন রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার ৩৬৪ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা করে ৫৫৪ রান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১ রানে অলআউট হয়ে গিয়ে ম্যাচে পরাজিত হয় অসিরা।

আগেরদিন ১১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন চান্দিমাল। সেখান থেকে ৪র্থ দিন লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন আরও ৮৮ রান। মিচেল স্টার্কের বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন তিনি।

পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম ব্যাটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েছেন লঙ্কানদের এ অভিজ্ঞ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ১৬ চার ও পাঁচটি ছয়ের মারে ৩২৬ বলে ২০৬ রানে অপরাজিত থাকেন চান্দিমাল। অফস্পিনার রমেশ মেন্ডিস করেন ২৯ রান। ৬ উইকেটে ৪৩১ রান নিয়ে দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ৫৫৪ রানে।

চান্দিমালের রেকর্ড ডাবল সেঞ্চুরির পর আরও বড় রেকর্ডের জন্ম দেন অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া। প্রথম ইনিংসে ১১৮ রানে ৬ উইকেট নেওয়া ৩০ বছর বয়সী এ স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ার ছয় ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন। তাও মাত্র প্রথম ইনিংসের অর্ধেক (৫৯) রানে!

দিনের দ্বিতীয় সেশনে অস্ট্রেলিয়া যখন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তখন কে বুঝতে পেরেছিল যে ৪র্থ দিনই শেষ হবে খেলা। তবে সফরকারীদের শুরুটা খারাপ ছিল না। ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা উদ্বোধনী জুটিতেই ৪৯ রান তুলে ফেলেন। অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিস ওয়ার্নারকে (২৪) এলবিডব্লু করে ভাঙে সেই জুটি।

১০ রান পর খাজাকে (২৯) সাজঘরে ফিরিয়ে প্রবাত জয়াসুরিয়া ২য় ইনিংসে প্রথম উইকেট তুলে নেন। আগ বাড়িয়ে রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়েছিলেন এই অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান। কিন্তু দুর্দান্ত টার্ন করা বলটি ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় শর্ট লেগ ফিল্ডারের হাতে। ওই ওভারের চার বল পরেই স্টিভ স্মিথকেও (০) প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দেন জয়াসুরিয়া। প্লাম্ব এলবিডব্লু হয় অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ক।

এরপর রমেশ ট্রাভিস হেডকে (৫) ফেরানোর পর পাঁচ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মিডলঅর্ডার ধসিয়ে দেন জয়াসুরিয়া। ৩১তম ওভারের শেষ বলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার মারনাস লাবুশেনকে (৩২) এলবিডব্লু করার পর ৩৩তম ওভারে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে ক্যামেরন গ্রিন (২৩) ও মিচেল স্টার্ককে (০) ফিরিয়ে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত ৫ উইকেট শিকার করেন জয়াসুরিয়া।

আরেক টেস্ট অভিষিক্ত মহীশ তিকশানাও এরপর যোগ দেন স্পিন উৎসবে, তুলে নেন প্যাট কামিন্স (১৬) ও নাথান লায়নের (৫) উইকেট। পরের ওভারেই সোয়েপসনকে বোল্ড করে ম্যাচের ইতি টানেন জয়াসুরিয়া। ফলে এক দিন হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা, সেই সাথে সিরিজে সমতা ও রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম তুলে নেন প্রবাত জয়াসুরিয়া’র।

কেননা শ্রীলঙ্কার হয়ে অভিষেক টেস্টে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি এখন নিজের করে নিয়েছেন জয়াসুরিয়া। ম্যাচে ১৭৭ রানে ১২ উইকেট শিকার করেন তিনি। গতবছর বাংলাদেশের বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টে নিজের অভিষেকে ১৭৮ রানে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমা।

এছাড়া সবমিলিয়ে বিশ্বের মাত্র পঞ্চম বোলার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ১২ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন জয়াসুরিয়া। তার আগে এটি করেছেন ইংল্যান্ডের ফ্রেড মার্টিন (১২), অস্ট্রেলিয়ার বব ম্যাসি (১৬), ভারতের নরেন্দ্র হিরওয়ানি (১৬) ও অস্ট্রেলিয়ার জেসন ক্রেজা (১২)।


শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া এর স্কোরবোর্ড

অস্ট্রেলিয়া (১ম ইনিংস) – ৩৬৪/১০ (১১০.০)

শ্রীলঙ্কা (১ম ইনিংস) – ৫৫৪/১০ (১৮১.০)

অস্ট্রেলিয়া (২য় ইনিংস) – ১৫১/১০ (৪১.০)

ফলাফল – শ্রীলঙ্কা ইনিংস এবং ৩৯ রানে জয়ী

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – প্রবাথ জয়াসুরিয়া

প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – দিনেশ চান্ডিমাল



শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের একাদশ

শ্রীলঙ্কা দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকভেলা (উইকেট রক্ষক), কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, কামিন্দু মেন্ডিস, রমেশ মেন্ডিস, দিনেশ চান্ডিমাল, মহীশ তিকশানা, কাসুন রাজিথা, এবং প্রবাথ জয়সুরিয়া।
অস্ট্রেলিয়া প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেট রক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার, মারনাস লাবুশেন, উসমান খাজা, স্টিভেন স্মিথ, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল স্টার্ক, ট্র্যাভিস হেড, নাথান লায়ন এবং মিচেল সোয়েপসন।
Exit mobile version