BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ০৬ সেপ্টেম্বর: এশিয়া কাপ ২০২২, সুপার ৪- ম্যাচ ৩ (ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা)

IND vs SL

ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা

ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা (সুপার ৪ – ম্যাচ ৩) – হাইলাইটস

ফেবারিট হিসেবে এশিয়া কাপে অংশ নিলেও সুপার ফোর থেকে প্রায় বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে ভারতের। পাকিস্তানের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬ উইকেটে হারের ফলে ফাইনালের আশা কার্যত শেষ তাদের। অন্যদিকে ম্যান ইন ব্লুদের হারিয়ে ফাইনালের জন্য আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মা ঝড় অবলোকনের পর দেখা গিয়েছে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারের তাণ্ডবও। পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসদের শুরু করে দেয়া সেই ঝড় সচল রেখে শ্রীলঙ্কাকে জয় এনে দেন ভানুকা রাজাপক্ষ ও দাসুন শানাকা। ভারতের দেয়া ১৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।

রান তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। যেখানে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান তুলে ফেলে তারা। ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নেন ওপেনার নিসাঙ্কা। তবে ভারতীয়রা প্রথম উইকেটের দেখা পান ইনিংসের ১২তম ওভারে। মারকুটে নিসাঙ্কাকে আউট করে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। নিসাঙ্কা ৪ চার ২ ছক্কায়, ৩৭ বলে ৫২ রান করেন।

সেই সাথে ১২তম ওভারের প্রথম বলে ৯৭ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। চাহাল একই ওভারে ফেরান ওয়ানডাউনে নামা চারিথ আসালাঙ্কাকে। ৩ বল খেলেও তিনি কোনো রান করতে পারেননি। বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি দানুশকা গুনাথিলাকা। ৭ বল খেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হয়ে তিনি মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন।

এরপর ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নেওয়া কুশলকে ৫৭ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নে ফেরান চাহাল। তাঁর ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ২টি ছক্কার মার। তবে দুই স্পিনার চাহাল এবং অশ্বিনের ঘূর্ণি জাদুতে হঠাৎ করেই ম্যাচের চিত্র বদলে যায়। ৯৭/০ থেকে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ১১০/৪! ১৩ রানের মাঝে চার উইকেট হারিয়ে ম্যাচে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় শ্রীলঙ্কা।

এমতাবস্থায় জুটি গড়েন রাজাপক্ষ এবং অধিনায়ক শানাকা। দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় শ্রীলঙ্কা। শেষ ১২ বলে ২১ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমারের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারটা লঙ্কানদের কাজটা সহজ করে দিল একেবারে। দুই ওয়াইডের সঙ্গে দুই চারসহ ওই ওভার থেকেই ১৪ রান নিলেন শানাকা ও রাজাপক্ষ। সমীকরণ হয়ে গেলে ৬ বলে ৭ রানের।

আর্শদীপ সিং এর করা শেষ ওভারেও অবশ্য রোমাঞ্চ কম হয়নি। ২ বলে প্রয়োজন ২ রান, শানাকা ব্যাটে বল লাগাতে না পারলেও রানের জন্য দৌড় শুরু করেন। ভারতীয় উইকেটকিপার ঋষভ পন্ত থ্রো করেছিলেন, স্টাম্পে তো লাগাতে পারলেনই না, উল্টো ১ রানের জায়গায় ২টি বাই রান হয়ে গেল। ফলে ১ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় শ্রীলঙ্কা।

রাজাপক্ষ ২ ছক্কায় ১৭ বলে ২৫* এবং শানাকা ৪ চার ও ১ ছক্কায়, ১৮ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৩৪ বলে ৬৪ রান। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন যুজবেন্দ্র চাহাল। একটি উইকেট শিকার করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক রোহিতের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান তুলেছিল ভারত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান কেএল রাহুল (৬)। পরের ওভারেই ‘ডাক’ মারেন বিরাট কোহলি। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব নেন রোহিত। তরুণ সূর্যকুমার যাদবকে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৫৮ বলে ৯৭ রানের ধ্বংসাত্মক জুটি।

ক্যারিয়ারের ২৮ নম্বর ফিফটি তুলে নেওয়া রোহিত থামেন ৫ চার এবং ৪ ছক্কায়, ৪১ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে। অন্যদিকে আশা জাগিয়েও বেশিদূর যেতে পারেননি সূর্যকুমার। ১ চার ১ ছক্কায় ২৯ বলে ৩৪ রান করে তিনি শিকার হন শানাকার। এরপর ভারতীয় দলের আর কোন ব্যাটারই লঙ্কান বোলাদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে পারেননি।

হার্দিক পান্ডিয়া (১৭), দীপক হুডা (৩), ঋষভ পন্থ (১৭), ভুবনেশ্বর (০) রানে আউট হন। শেষে অশ্বিন ৭ বলে অপরাজিত ১৫ রানের ক্যামিও ইনিংস না খেললে ভারতের স্কোর অতদূর যেত না। লঙ্কানদের পক্ষে দিলশান মাদুশাঙ্কা সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া চামিকা করুনারত্নে ও দাসুন শানাকা ২টি করে এবং মহীশ তিকশানা ১টি উইকেট তুলে নেন।


ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা এর স্কোরবোর্ড

ভারত – ১৮১/৭ (২০.০)

শ্রীলঙ্কা – ১৮২/৫ (১৯.৫)

ফলাফল – শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী 

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – মোহাম্মদ নওয়াজ



ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একাদশ

ভারত রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ঋষভ পন্ত (উইকেট রক্ষক), বিরাট কোহলি, কেএল রাহুল, সূর্যকুমার যাদব, দীপক হুডা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, আর্শদীপ সিং, এবং যুজবেন্দ্র চাহাল।
শ্রীলঙ্কা দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেট রক্ষক), পাথুম নিসাঙ্কা, চারিথ আসালাঙ্কা, ভানুকা রাজাপক্ষ, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দানুশকা গুনাথিলাকা, চামিকা করুনারত্নে, আসিথা ফার্নান্দো, মহীশ তিকশানা, এবং দিলশান মাদুশাঙ্কা।
Exit mobile version