BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ০৭ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ বনাম ভারত (২য় ওডিআই)

BAN vs IND

বাংলাদেশ বনাম ভারত (২য় ওডিআই) – হাইলাইটস

গতকাল শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজের ২য় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বিশাল এক লক্ষ্য দাড় করায় বাংলাদেশ। পড়ে সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় লক্ষ্যে পৌছাতে পারে নেই ভারত। ফলে সিরিজ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। অন্য দিকে সিরিজ নিজেদের করে ভারতকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এছাড়া শেষ দিকে দুর্দান্ত ব্যাটিং এর সুবাদে এবং ভালো বোলিং-এর কারনে আবারও ম্যাচ সেরার খেতাব জিতে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।  

মিরপুর স্টেডিয়ামে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টসভাগ্য আবারও সহায় হয়েছিল বাংলাদেশের। টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস। ব্যাটিং করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের তোপে কোণঠাসা অবস্থা ছিল তাদের, ৬৯ রানে নেই ৬ উইকেট। ১৯ ওভারও হয়নি তখন। বাংলাদেশের আকাশে ছিল ঘোর অন্ধকার। এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো ছিল অসম্ভব। হয়তো ভাবতে পারেননি কেউই। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মেহেদি হাসান মিরাজ ভেবেছিলেন। অন্ধকার কাটিয়ে দলকে আলোর পথ দেখালেন এই যুগল। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে তাদের লড়াকু এক জুটিতে বাংলাদেশ পেলো ৭ উইকেটে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।

লিটনের সঙ্গে ওপেন করেছিলেন এনামুল হক বিজয়। শুরুটা ভালোই করেছিলেন তারা। কিন্তু সেই ভালোটা বেশিক্ষণ রইলো না। ৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করা বিজয় জীবন পেয়েও সেটা হেলায় নষ্ট করলেন। এলবিডব্লিওর ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এনামুল হক বিজয়ের পর লিটন দাসকেও সাজঘরের পথ দেখান মোহাম্মদ সিরাজ। ভারতীয় এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক (২৩ বলে ৭)। 

ইনিংসের ১২তম ওভারে উমরান মালিক বল হাতে নিয়েই গতিতে ঝড় তুলেছিলেন। সাকিব আল হাসানকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে সামলাতে। এক ওভারেই কয়েকবার পরাস্ত হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে ওই ওভারটি মেইডেন দিলেও আউট দেননি সাকিব। এক ওভার পর নাজমুল হোসেন শান্তকে পেয়ে আর উইকেট তুলে নিতে দেরি করেননি উমরান। ৩৫ বলে বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২০ বলে ৮ রানেই থামে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ইনিংসটি। 

এরপর এক ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মুশফিক ও আফিফ। ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান, ও আফিফ হোসেন (০)। ৬৯ রানেই নেই ৬ উইকেট। বাংলাদেশের জন্য বড় লজ্জাই অপেক্ষা করছিল। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য লড়াই করে দলকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর আগের ম্যাচের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ।

মিরাজ পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ৮৩ বলে ৮ চার ও ৪ ছয়ে করেছিলেন ১০০ রান। মাহমুদউল্লাহর হাফসেঞ্চুরি ছিল ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৭তম। ৭ চারের সাহায্যে করেন ৯৬ বলে ৭৭ রান। সপ্তম উইকেটে তারা ১৬৫ বলে গড়েন ১৪৮ রানের জুটি। এছাড়া ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন নাসুম আহমেদ। 

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ওয়াশিংটন সুন্দর। ৩৭ রানে তিনি নেন ৩টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার উমরান মালিক আর মোহাম্মদ সিরাজের।

জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিলেন ভারতীয়রা। বিরাট কোহলিকে বোল্ড করেন এবাদত হোসেন। ৬ বলে ৫ রান করেছিলেন তিনি। ১০ বলে ৮ রান করে আউট হয়ে যান শিখর ধাওয়ানও। এরপর ৩৯ রানের মাথায় ওয়াশিংটন সুন্দর (১১), ১৪ রান করে লোকেশ রাহুলও আউট হয়ে যান। ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল ভারতীয়রা, তখন হাল ধরেন স্রেয়াশ আয়ার এবং অক্ষর প্যাটেল। ১০৭ রানের অনবদ্য জুটি গড়ে তোলেন তারা।

এ সময় আবারও ত্রাতার ভূমিকায় মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে ক্যাচ তুলে দিলেন স্রেয়াশ আয়ার। তার ১০২ বলে খেলা ৮২ রানের ইনিংসটি শেষ হেয় যায় ভারতের ১৭২ রানের মাথায়। এরপর অক্ষর প্যাটেলও আউট হন এবাদত হোসেনের বলে। করেছিলেন ৫৬ বলে ৫৬ রান। 

এরপর শার্দুল ঠাকুর ৭ রান করে এবং দিপক চাহার ১১ রান করে আউট হয়ে যান। এ সময় মাঠে নামেন রোহিত শর্মা। নেমেই ঝড় তোলেন। ২৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তারই সাক্ষ্য দেয়। পুরো টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং করলেন। কিন্তু ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় দলকে আর জেতাতে পারলেন না তিনি। এছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ ১২ বল খেলে ২ রান করে আউট হয়ে যান। শেষে ১৯ রান এক্সট্রা সহ ২৬৬ রানে থেমে যায় তারা। 

এবাদত হোসেন ৩টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি, সাকিব আল হাসান ২টি উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।


বাংলাদেশ বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড

ভারত – ২৬৬/৯ (৫০.০)

বাংলাদেশ – ২৭১/৭ (৫০.০)

ফলাফল – বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – মেহেদী হাসান মিরাজ



বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ

বাংলাদেশ লিটন দাস (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), এনামুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
ভারত রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), কেএল রাহুল (উইকেটরক্ষক), বিরাট কোহলি, শিখর ধাওয়ান, ওয়াশিংটন সুন্দর, শ্রেয়াস আইয়ার, শার্দুল ঠাকুর, অক্ষর প্যাটেল, মোহম্মদ সিরাজ, দীপক চাহার, ওমরান মালিক
Exit mobile version