BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ২২ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ বনাম ভারত (২য় টেস্ট)

বাংলাদেশ বনাম ভারত

বাংলাদেশ বনাম ভারত (২য় টেস্ট) – হাইলাইটস

২২ই ডিসেম্বর মিরপুরে ২টি টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে ১ম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে মোটামোটি একটি লক্ষ্য দাড় করায় বাংলাদেশ। এরপর সেই ট্রায়েল নিয়ে ১ম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে লিড সহ গুটিয়ে যায় ভারত। ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে বুঝে শুনে খেলেও বিশাল টার্গেট তৈরী করতে পারেন নেই বাংলাদেশ। এরপর সেই কম লক্ষ্য নিয়ে ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ৪র্থ দিনের ১ম সেশনেই জয় পেয়ে যায় ভারত। ফলে সিরিজ নিজেদের করে নেয় তারা। অন্যদিকে এই ম্যাচ হেরে হোয়াইটওয়াশ হতে হয় বাংলাদেশকে। এছাড়া ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ম্যান অফ দ্যা সিরিজের খেতাব জিতে নেন চেতেশ্বর পূজারা।

টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন বাংলাদেশ এবং ভারতকে আমন্ত্রন জানায় বোলিং-এর জন্য। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই ছিল বাংলাদেশের। দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে বাংলাদেশ দল ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়ে চলছিলো। কিন্তু ১৫তম ওভারে এসেই ছন্দপতন ঘটলো। আউট হওয়ার আগে জাকির করেছিলেন ১৫ রান। পরের ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৪ রান করেছিলেন তিনি। ভালো কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসানও। কিন্তু ৩৯ বল খেলে মাত্র ১৬ রান করেন তিনি। সাকিব আউট হওয়ার পর মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম। এই জুটিটা আশা জাগাচ্ছিল। দু’জনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৪৮ রানের জুটিও গড়ে ওঠে। কিন্তু ১৩০ রানে পড়ে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেট। ২৬ রান করেই বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। 

এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ৪২ রানের একটি জুটি গড়েন মুমিনুল। কিন্তু লিটন ২৫ করেই মাঠ ছাড়েন। মেহেদি হাসান মিরাজ উইকেটে টিকতে চেয়েছিলেন। তবে ৫১ বল খেলে ১৫ রানেই তাকে ফিরতে হয়। ৬ রান করে নুরুল হাসান সোহান এলবিডব্লিউ হন উমেশ যাদবের বলে। তাসকিন আহমেদের উইকেটটিও নেন ডানহাতি এই পেসার। একটা প্রান্ত ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়া মুমিনুল হক সেঞ্চুরির সুযোগ মিস করেন। ১৫৭ বলে ১২ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৮৪ রান করেন মুমিনুল। শেষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৩.৫ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে গেছে সাকিব আল হাসানের দল।

সবমিলিয়ে মাত্র ২৫ রানে ৪টি উইকেট শিকার করেন উমেশ। ৭১ রানে ৪ উইকেট রবিচন্দ্রন অশ্বিনের।

৮৬.৩ ওভারে ভারতের প্রথম ইনিংস ৩১৪ রানে থামিয়েছিল সাকিব আল হাসানের দল। প্রথমেই মাঠ ছাড়েন ৪৫ বলে ১০ রান করা রাহুল। ২ ওভার পরেই ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন শুভমান গিল। তবে তৃতীয় উইকেটে একটি জুটি গড়ে ফেলেছিলেন চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। ৯৪ বল কাটিয়ে গড়া তাদের ৩৪ রানের জুটিটিও ভাঙেন তাইজুল, ইনিংসের ৩১তম ওভারে। ২৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন পূজারা। এরপর ব্যক্তিগত ২৪ রানে কোহলি হন তাসকিন আহমেদের শিকার। তারপর রিশাভ পান্ত আর শ্রেয়াস আইয়ার পঞ্চম উইকেটে গড়েন ১৫৯ রানের বড় জুটি। সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় এসে ফিরলেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিশাভ পান্ত (৯৩)। পান্ত আউট হওয়ার পর দ্রুতই আরও দুটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। অক্ষর প্যাটেল (৪) ও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো শ্রেয়াস আইয়ার, ফেরেন ৮৭ করে। অশ্বিনকে ১২ রানে এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। ১৪ করে উমেশ যাদব হন তাইজুলের শিকার। সিরাজ ফেরেন ৭ করে। 

বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান আর তাইজুল ইসলাম নেন ৪টি করে উইকেট।

৭০.২ ওভারে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছিল ২৩১ রানে। ফলে মিরপুর টেস্টে ভারতের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ১৪৫ রানের। তাদের হয়ে সবথেকে বেশি রান করেছিলেন লিটন দাস। ৭ চারের সাহায্যে ৯৮ বলে ৭৩ রান করেছিলেন তিনি। এছাড়া জাকির হাসান করেছিলেন ৫১ রান, নুরুল হাসান ৩১ রান এবং তাসকিন আহমেদ ৩১ রান। 

২য় ইনিংসে ভারতের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মোহাম্মদ সিরাজ।

লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৪৫ রানের। তবে এই ছোট লক্ষ্য পাড় করতেই বাংলাদেশের বোলারদের তোপে পড়ে ভারত উইকেট হারিয়েছিল ৭টি। তারপরও সব আশার অবসান ঘটিয়ে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ভারত। ঐ ইনিংসে ভারতের হয়ে সবথেকে বেশি রান করেছিল রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চার ৪ ও ১ ছয়ের সাহায্যে ৬২ বলে ৪২ রান করেছিলেন তিনি। 

২য় ইনিংসে ভারতের হয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৩ রানে নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া সাকিব নেন দুটি উইকেট।


বাংলাদেশ বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড

বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) – ২২৭/১০ (৭৩.৫)

ভারত (১ম ইনিংস) – ৩১৪/১০ (৮৬.৩)

বাংলাদেশ (২য় ইনিংস) – ২৩১/১০ (৭০.২)

ভারত (২য় ইনিংস) – ১৪৫/৭ (৪৭.০)

ফলাফল – ভারত ৩ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – রবিচন্দ্রন অশ্বিন

প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – চেতেশ্বর পূজারা



বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ

বাংলাদেশ সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম, খালেদ আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ।
ভারত কেএল রাহুল (অধিনায়ক), ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), চেতেশ্বর পূজারা, শুভমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার, বিরাট কোহলি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল, উমেশ যাদব, জয়দেব উনাদকাট, মোহাম্মদ সিরাজ।
Exit mobile version