BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

দীনেশ কার্তিকের ফিরে আসার রহস্য ফাঁস করলেন বন্ধু – কোচ অভিষেক নায়ার

Krishnakumar Dinesh Karthik is an Indian professional cricketer and commentator who nationally plays for the Indian Cricket Team and currently in Indian Premier League playing for Royal Challengers Bangalore.

Friend - coach Abhishek Nair reveales the secret of Dinesh Karthik's comeback

১০৬৬ দিন পরে দেশের জার্সি গায়ে চাপান কার্তিক, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। জাতীয় দলে ফিরেই ফিনিশারের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন তিনি।কিন্ত কিভাবে করলেন এই দুর্দান্ত কামব্যাক? সফলতার পেছনের গল্পই কি

‘‘দীনেশ কার্তিক ফুরিয়ে গিয়েছেন।’’ কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে একের পর এক ব্যর্থতার পরে এই উক্তিই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন ক্রিকেট ভক্তেরা। ২০২১ সালে ইংল্যান্ড সফরে তাঁকে ধারাভাষ্য দিতে দেখে অনেকে তাঁর অবসরের দিন গুনতেও শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই সময় পাশে ছিলেন বর্তমান ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কার্তিককে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি আছে তোমার মধ্যে।’’ 

বিশ্বাস রেখেছিলেন প্রিয় বন্ধু এবং ব্যক্তিগত কোচ অভিষেক নায়ারও। বারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে ছেড়ে দিলেও সঙ্গ ছাড়েননি নাইটদের সহকারী কোচ অভিষেক। দুজনেই শপথ নিয়েছিলেন, ‘‘ভুল প্রমান করে ছাড়ব প্রত্যেককে।’’

গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন করে পথ চলা শুরু হয় কার্তিকের। নায়ারের কাছে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় দলে আমাকে ফিরতেই হবে। তার জন্য যতটা পরিশ্রম প্রয়োজন, করতে রাজি।’’ পুরানো এক যোদ্ধাকে পুনর্জন্ম দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নায়ারও। কেকেআর যখন তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, কার্তিক আরও ভেঙে পড়েন। কিন্তু হাল ছাড়েননি।

ঘুরে দাঁড়ানোর জেদ হার মানায় তাঁর বয়সকে (৩৭ বছর) ২০২২এর আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ৩৩০ রান করে যাবতীয় সমীকরণ পাল্টে দেন অভিজ্ঞ সৈনিক। জাতীয় নির্বাচকদের আলোচনায় ফিরে আসেন। সুনীল গাভাস্কার থেকে কেভিন পিটারসেনের মতো প্রাক্তনরা বলতে শুরু করেন, অবিলম্বে টিটোয়েন্টি দলে কার্তিককে ফেরানো হোক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন ঘটে তাঁর।

১০৬৬ দিন পরে দেশের জার্সি গায়ে চাপান কার্তিক, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। জাতীয় দলে ফিরেই ফিনিশারের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন তিনি। কটকে ২১ বলে অপরাজিত ৩০ রানের ইনিংস বিফলে গেলেও রাজকোটে তাঁর ২৭ বলে ৫৫ রান দলকে জয় উপহার দেয়।

কী করে এতটা পরিবর্তন ঘটল কার্তিকের মধ্যে? তাঁর ব্যক্তিগত কোচ অভিষেক নায়ার গণমাধ্যমকে বলেছেন ‘‘ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নিজেকে নতুন করে তুলে ধরার মহড়া শুরু করে। আমরা দুজনেই শপথ নিই, সকলকে ভুল প্রমাণিত করব। কার্তিকের মধ্যে যে এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি, তা বুঝিয়ে দিতে হত ক্রিকেটপ্রেমীদের।’’ 

নায়ার আরো বলেন ‘‘ আগে যে কোনও জায়গায় ব্যাট করত ও। নির্দিষ্ট কোনও দায়িত্ব ছিলো না। আমরা আলোচনা করে ঠিক করি, ফিনিশারের ভূমিকা পালন করুক দীনেশ। নির্দিষ্ট একটি ভূমিকা থাকলে প্রস্তুতিও সেই অনুযায়ী নেওয়া যাবে।’’ শুরু হয় দুই বন্ধুর নতুন পথচলা। ব্যক্তিগত জীবনেও হোঁচট খেয়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছেন কার্তিক। ক্রিকেটজীবনেও একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। 

নায়ার বলেন ‘‘প্রত্যেক দিন চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা ব্যাট করত। ক্রিকেট ব্যাকরণ মেনে শট খেলার পাশাপাশি নতুন শট আবিষ্কার করতে শুরু করে। যেমন পেসারকে সুইপ মারা। এই শটের গুরুত্ব অন্য রকম। শেষের ওভারে ফাইন লেগ বৃত্তের মধ্যে থাকে। ব্যাটে ঠিক মতো বল লাগলে চার আসবেই। সেই সঙ্গেই মারত স্কুপ। শুধুমাত্র প্রথাগত স্কুপ নয়। রিভার্স স্কুপ মারার প্রস্তুতিও নিত।” 

নায়ার এসময় আরো জানানমাঠে যে শট ওকে এখন খেলতে দেখছেন, তা কিন্তু হঠাৎ করে মারতে শুরু করেনি। প্রত্যেকটি শট দুঘণ্টা করে অনুশীলন করত। স্কুপ হোক কি থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে আপার কাট, আলাদা সময় ভাগ করে নিয়ে মহড়া চলত। 

দেশের জার্সিতে নিজেকে প্রমাণ করা হয়ে গিয়েছে কার্তিকের। বার অস্ট্রেলিয়াগামী টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিমানে উঠেপড়ার অপেক্ষা। সেখানেও কি লেখা হবে আরেকটি দুর্দান্ত ফিরে আসার গল্প?

Exit mobile version