জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ (প্রথম টি২০) – হাইলাইটস
শনিবার, তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথমটিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। হারারে স্পোর্টস ক্লাব, হারারেতে ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের চমৎকার সমন্বয়ে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭ রানের জয় পেয়েছে। একই সঙ্গে এই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের দিকে একধাপ এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
অধিনায়কত্ব ক্যারিয়ারের শুরুর ম্যাচে টসভাগ্য পাশে পেলেন না নুরুল হাসান সোহান। সোহানের অধীনে নতুন চেহারার বাংলাদেশ দল নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে ফিল্ডিং করতে নেমেছিল।
ফিল্ডিং করতে নেমে প্রথম ওভারটা অধিনায়ক সোহান তুলে দিয়েছিলেন তাসকিনের হাতে। প্রথম ওভারেই ৮ রান দিয়েছিলেন তাসকিন। বল করতে এসেই ব্রেক থ্রু উপহার দিলেন দ্য ফিজ। প্রথম তিন বলে দিয়েছিলেন ৩ রান। চতুর্থ বলেই মোস্তাফিজের বলে আকাশে ক্যাচ তুলে দেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার রেগিস চাকাবভা। ১৫ রানের মাথায় পড়লো প্রথম উইকেট। রেগিস চাকা্বভা ১১ বলে করেন ৮ রান।
বাংলাদেশের সামনে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন ক্রেইগ আরভিন। সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই তাকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দিলেন মোসাদ্দেক। বলটা ছিল কিছুটা দ্রুত গতির। পেছনের পায়ে ভর করে অনসাইডে খেলতে চেয়েছিলেন আরভিন। কিন্তু গতির কারণে বলটা মিস করেন এবং স্ট্যাম্প উড়ে গেলো তার। ২ চারের সাহায্যে ১৮ বলে ২১ রান করেন তিনি।
আরভিন ২১ রান করে আউট হয়ে গেলেও ওয়েসলি মাধভিরে এবং শন উইলিয়ামস মিলে বিপজ্জনক জুটি হয়ে উঠছিলেন বাংলাদেশের জন্য। একের পর এক বোলার ব্যবহার করেও যখন এই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না সোহান, তখন তার মুখে হাসি ফোটান মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় শন উইলিয়ামসের উইকেট তুলে নেন কাটার মাস্টার। ১৯ বলে ৩৩ রান করে ফিরে যান জিম্বাবুয়ের এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ৪টি বাউন্ডারি এবং একটি ছক্কার মার মারেন তিনি।
এরপর ওয়েসলি মাধভিরে এবং সিকান্দার রাজা মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৯১ রান যোগ করেন স্বাগতিকদের ইনিংসে। ৪৬ বলে ৬৭ রান করে দলীয় ১৯০ রানের মাথায় আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন ওয়েসলি মাধভিরে। তিনি ৯টি চার মেরেছিলেন। ২৬ বলে ৬৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সিকান্দার রাজা। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কার মার মারেন তিনি। ওয়েসলি মাধভিরে এবং সিকান্দার রাজার ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
২০৬ রানের বিশাল লক্ষ্য। শুরুটা যেমন করার দরকার ছিল, তেমন করতে পারেনি টাইগাররা। মারকুটে ব্যাটিং তো নয়ই, উল্টো উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে নামেন লিটন দাস আর মুনিম শাহরিয়ার। প্রথম ওভারে তারা নেন ৫ রান। দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন মুনিম।৮ বলে ৪ রান করেন তিনি।
সপ্তম ওভারে শন উইলিয়ামসের বলে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। সেটা ক্যাচ ছিল না, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়ায় ওই সুযোগে লিটনকে রানআউট করে দেন উইলিয়ামস।১৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে গড়া লিটনের ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসটি থামে বোকার মতো আউটে।
শুরুটা করেছিলেন ধীরেসুস্থে। ২৫ বলে ২০ রান করে উইকেটে সেট হন এনামুল হক বিজয়। এরপর হাত খোলার চেষ্টা করেন। ইনিংসের দশম ওভারের ৫ম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। ২৭ বলে ২ ছক্কায় ২৬ রানে সাজঘরে ফিরেছেন বিজয়।
দুই ওভার পর আফিফ হোসেনও আউট হন নিজের ভুলে (৮ বলে ১০ রান)। এরপর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান উইকেটে আসার পর জয়ের আশা জাগে বাংলাদেশের। নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ২০ বলে ৪০ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন সোহান। জুটিটি ভাঙে শান্ত পুল করতে গিয়ে বল সোজা আকাশে তুলে দিলে। ২৫ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে জঙউইয়ের শিকার হন শান্ত। এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন করেন ১০ বলে ১৩। ২৬ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক নুরুল হাসান। শেষে ১৮৮ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে ২টি উইকেট নেন জঙউইয়ে। ১টি করে উইকেট নেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, সিকান্দার রাজা, রিচার্ড নাগারভা।
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
জিম্বাবুয়ে – ২০৫/৩ (২০)
বাংলাদেশ – ১৮৮/৬ (২০)
ফলাফল – জিম্বাবুয়ে ১৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – সিকান্দার রাজা
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
জিম্বাবুয়ে | ক্রেগ আরভিন (অধিনায়ক), রেগিস চাকাবভা (উইকেটরক্ষক), শন উইলিয়ামস, ওয়েসলি মাধভেরে, মিল্টন শুম্বা, সিকান্দার রাজা, লুক জংওয়ে, রায়ান বার্ল, রিচার্ড নাগারভা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, তানাকা চিভাঙ্গা |
বাংলাদেশ | নুরুল হাসান (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), এনামুল হক, লিটন দাস, মুনিম শাহরিয়ার, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান |