Skip to main content

ক্রিকেট হাইলাইটস, ১৭ জুলাই: শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান (১ম টেস্ট – ২য় দিন)

শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান

শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান (প্রথম টেস্ট – ২য় দিন)

শ্রীলঙ্কাকে ২২২ রানে বেধে ফেলার পর সবাই ভেবেছিল, রানের পাহাড়ে চড়বে পাকিস্তান। কিন্তু সবাই ভাবে এক, হয় আরেক। ব্যাট করতে নেমে দারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তানিরা। ৭৩ রানে নেই ৫ উইকেট, ৮৫ রানে নেই ৭ উইকেট। ১৪৮ রানে পড়ে যায় ৯ উইকেট।

এরপর শেষ উইকেট জুটিতে ৩০.৫ ওভারে ৭০ রানের অসাধারণ জুটি গড়ে তোলেন বাবর আজম এবং নাসিম শাহ। এর মধ্যে ১১ নম্বর ব্যাটার নাসিম ৫২ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাকি বলগুলো মোকাবেলা করলেন বাবর আজম।

শুধু তাই নয়, লঙ্কান বোলিংয়ে পাকিস্তানি ব্যাটিং লাইনআপে যে ধ্বংসস্তুপ তৈরি হয়েছিল, সেখানে দাঁড়িয়ে অনবদ্য এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন বাবর। ২৪৪ বল মোকাবেলা করে তিনি যখন শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হলেন তখন তার নামের পাশে শোভা পাচ্ছে ১১ চার ২ ছক্কায়, ১১৯ রান। এর আগে চতুর্থ উইকেটে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রানের জুটি গড়ে তুলে ছিলেন বাবর এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান।

ফলে গলে শ্রীলঙ্কার ২২২ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। যেখানে বড় লিডের স্বপ্ন দেখছিল লঙ্কানরা, সেখানে তারা লিড পেলো মাত্র ৪ রানের। পাকিস্তানের ২১৮ রানের মধ্যে একাই ১১৯ রান করলেন বাবর। বাকিরা সবাই মিলে করলেন ৯৯ রান।

ক্যারিয়ারে এটা বাবরের ৭ম টেস্ট সেঞ্চুরি। তবে একের পর এক ম্যাচে যেভাবে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন পাকিস্তান অধিনায়ক, তাতে এরই মধ্যে কিংবদন্তির কাতারে তার নাম লিখে দিতে শুরু করেছে ক্রিকেট বোদ্ধারা। পাকিস্তানি ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল রিজওয়ানের (১৯)। ১৮ রান করেন ইয়াসির শাহ, ১৭ রান আসে হাসান আলির ব্যাট থেকে।

দ্রতই বল হাতে ঝলসে ওঠেন সদ্য অস্ট্রেলিয়াকে নাকানি-চুবানি খাওয়ানো বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া। লঙ্কানদের প্রথম ৭ উইকেটের ৫টিই তিনি শিকার করেন। এর মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ইনিংসেই ৫ উইকেট পেলেন জয়াসুরিয়া। এমন রেকর্ড তার আগে করেছিলেন মাত্র দুজন ক্রিকেটারঅস্ট্রেলিয়ার ক্ল্যারি গ্রিমেট ও ইংল্যান্ডের টম রিচার্ডসন।

আজ দিনের তৃতীয় বলেই সঙ্গী আজহার আলীকে (৩) হারান বাবর, এরপর তাঁকে এক প্রান্তে অসহায় দর্শক হিসেবে রেখে রিজওয়ান, মোহাম্মদ নওয়াজরা (৫) যেন বিদায়ের মিছিলে নামেন। দলের ব্যর্থতার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন বাবর। ২১ রান করতেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন।

৮৫ রানেই ৭ উইকেট হারায় পাকিস্তান। মধ্যাহ্নবিরতিতে যাওয়ার সময় রান ৭ উইকেটে ১০৪, বাবরের রান তখন ৩৪। অষ্টম উইকেটে বাবরের সঙ্গে ইয়াসিরের জুটিটা হলো ২৭ রানের, নবম উইকেটে হাসানের সঙ্গে ৩৬ রানের। তার মানে, শেষ তিনটি জুটিতে নিচের সারির তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে বাবর পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন ১৩৩ রান।

ইনিংসের ৬০তম ওভারের শেষ বলে হাসান আউট হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই ফিফটি পেয়েছেন বাবর (৯৮ বল, ৫ চার)। এরপর ধীর গতিতেই এগিয়েছেন বাবর ও নাসিম, জুটিতে প্রথম ১৬ ওভারে এসেছে ২৪ রান। ৮৪ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় পাকিস্তান।

চা বিরতির পর অবশ্য সেঞ্চুরি পেতে সময় লাগেনি বাবরের। বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় বলেই চার মারলেন মহীশ তিকশানার বলে, তাঁর ইনিংসের দশম চার। এর পরের বলেই সিঙ্গেল। সেঞ্চুরি!  এরপর বেশিক্ষণ অবশ্য আর উইকেটে টিকতে পারেননি বাবর। জয়াসুরিয়ার দুই ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন, আগ্রাসনের ইঙ্গিত ছিল তাঁর ব্যাটে।

কিন্তু ৯১তম ওভারে তিকশানা’র বলে লেগ বিফোরে ফাঁদে পড়ে এলবিডব্লু হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন বাবর। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। লঙ্কানদের হয়ে জয়াসুরিয়া ছাড়াও ২টি করে উইকেট তুলে নেন রমেশ মেন্ডিস ও মহীশ তিকশানা। এছাড়া কাসুন রাজিথা ১টি উইকেট নেন।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩৩ রানে মোহাম্মদ নওয়াজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে (১৬)। তবে এরপর আর কোন বিপদ ঘটতে দেয়নি স্বাগতিকরা। ১১.৫ ওভারে ৩৬ রান তুলে সফরকারীদের থেকে ৪০ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো ১৭ এবং নাইটওয়াচ ম্যান রাজিথা ৩ রানে অপরাজিত আছেন।


শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান এর স্কোরবোর্ড

শ্রীলঙ্কা (১ম ইনিংস) – ২২২/১০ (৬৬.১)

পাকিস্তান (১ম ইনিংস) – ২১৮/১০ (৯০.৫)

শ্রীলঙ্কা (২য় ইনিংস) – ৩৬/১ (১১.৫)


শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান


শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান ম্যাচের একাদশ

শ্রীলঙ্কা দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকভেলা (উইকেট রক্ষক), কুশল মেন্ডিস, ওশাদা ফার্নান্দো, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দিনেশ চান্ডিমাল, রমেশ মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মহীশ তিকশানা, কাসুন রাজিথা, এবং প্রবাথ জয়াসুরিয়া।
পাকিস্তান বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেট রক্ষক), আবদুল্লাহ শফিক, আজহার আলী, আগা সালমান, মোহাম্মদ নওয়াজ, ইমাম-উল-হক, ইয়াসির শাহ, শাহিন আফ্রিদি, হাসান আলী, এবং নাসিম শাহ।

আরো ব্লগ

শহীদ আফ্রিদিকে কেন বুম বুম আফ্রিদি বলা হয়?

পাকিস্তানের ক্রিকেটে অন্যতম জনপ্রিয় নাম শহীদ আফ্রিদি। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য ক্রিকেট বিশ্বে যথেষ্ট খ্যাতি আছে  তার। মাঠের ২২ গজে ব্যাট হাতে মারকাটারি ব্যাটিংয়ে তিনি যেমন ঝড় তুলতেন তেমনি সুদর্শন এই...

ডিআরএস কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘদিনের চুক্তি বিসিবির

বিপিএলের প্রথমদিকে ডিআরএস না থাকায় তা নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। তবে ডিআরএস কোম্পানির সঙ্গে এবার দীর্ঘদিনের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি )। আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সব...

আইসিসির বর্ষসেরা ক্যাপ পেয়ে উচ্ছ্বসিত মিরাজ

গেল কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ মেহেদি হাসান মিরাজ। এরমধ্যে ২০২২ সালটা কাটিয়েছেন স্বপ্নের মতো। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের সেরা ক্রিকেটটাই খেলেছেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। তাই তো,...

জয়ে ফিরতে অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছে কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্স

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) এবারের আসরে, খুব একটা ভালো ছন্দে নেই কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স। হার দিয়ে টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করে দলটি।  পরের ম্যাচগুলোতে যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিলো দলটির, সেখানে পরের...