
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া (প্রথম টেস্ট – ২য় দিন)
দিনের শুরু এবং শেষটা ছিল খুবই বাজে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের শুরুটা ভালো হয়নি, এবং শেষটা খারাপ হয়েছে আলোর স্বল্পতার সৌজন্যে। তবে এর মধ্যে খেলা হলো কেবল মাত্র ৪৪ ওভার। এই ৪৪ ওভারেই দাপট দেখিয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ওভারপ্রতি প্রায় ৪.৮৯ হারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান তুলে নিয়েছে তারা। তাতেই স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১০১ রানে এগিয়ে রয়েছে অসিরা।
সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রান। টস জিতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২১২ রান করে অলআউট হয়ে যায় লঙ্কানরা। লঙ্কানদের দ্রুত অলআউট করার পর প্রথম দিন শেষ বিকেলে ২৫ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিল অসিরা।
দ্বিতীয় দিন ম্যাচ শুরুর পূর্বেই নামে বৃষ্টি। যার ফলে দিনের প্রথম সেশন পুরোটাই ভেসে যায়। বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে অস্থায়ী গ্যালারি, সাইটস্ক্রিন ভেঙে পড়েছিল। টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ডও হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। অবশ্য প্রবল বাতাসে মাঠ শুকিয়ে এসেছে তুলনামূলক দ্রুত সময়েই, তবে দিনের খেলা শুরু হতে প্রায় ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট বিলম্বিত হয়েছে।
দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরু হলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই খেলা বিঘ্নিত হতে থাকে। দ্বিতীয় সেশন প্রায় পুরোটা খেলা হলেও তৃতীয় সেশনে কিছু খেলা হওয়ার পর আলোর স্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই ২য় দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার।
খেলা শুরু হলে দিনের সপ্তম বলেই ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৬ রানে সাজঘরে ফিরেন ট্রাভিস হেড। এরপর উসমান খাজা ও ক্যামেরন গ্রিন মিলে ৫ম উইকেটে ৭৭ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়ে তোলেন। এমনিতেও বাতাসের কারণে স্পিনাররা একটু ঝামেলায় পড়েছেন, তবে খাজা ও গ্রিন তাঁদের সামলেছেন দারুণভাবে।
অবশেষে জেফরি ভ্যান্ডারসের বলে ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ শট খেলতে গিয়ে শর্ট লেগে পাথুম নিশাঙ্কার দারুণ ক্যাচে পরিণত হন ৭১ রান করা খাজা। টেস্ট ক্যারিয়ারে ভ্যান্ডারসের এটিই প্রথম উইকেট। অবশ্য খাজার উইকেটের পরও অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণ থামাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।
এরপর ৬ষ্ঠ উইকেটে অ্যালেক্স ক্যারি ও গ্রিন মিলে ৯৩ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন। আক্রমণের মূল দায়িত্বটা ওই সময় নিজের কাঁধে নেন ক্যারি, নিয়মিত স্ট্রাইক বদলে তাঁকে দারুণভাবে সহায়তা করেছেন গ্রিন। চা–বিরতির আগেই মাত্র ৪৯ বলে দুজনের জুটি অর্ধশতক ছুঁয়ে ফেলে। বিরতির আগেই লিডও পেয়ে যায় সফরকারীরা।
ক্যারিকে থামান রমেশ মেন্ডিস। সামনে এসে খেলেছিলেন, তবে মিড-অফে দিনেশ চান্ডিমালের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ৪৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ৬টি চার মেরেছেন ক্যারি, সুইপ ও রিভার্স সুইপ করেছেন দারুণভাবে।
ক্যারি ফেরার পর মিচেল স্টার্কের সঙ্গে গ্রিনের জুটিতে স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয় আরও ৩৭ রান। তবে শেষ পর্যন্ত মেন্ডিসের বলে এলবিডব্লু হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন গ্রিন। আউট হওয়ার আগে ৬ বাউন্ডারিতে ১০৯ বলে ৭৭ রান করেন তিনি। গ্রিনের আউট হওয়ার পরের ওভারেই ভ্যান্ডারসেকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন স্টার্কও (১০)।
অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় দিনই অলআউট করে দেওয়ার ভালো সম্ভাবনা তৈরি করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেটি হয়নি প্যাট কামিন্সের প্রতি-আক্রমণে। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের করা ২৬ রানের ২২ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে—একটি চারের সঙ্গে মেরেছেন তিনটি ছক্কা। দিন শেষে কামিন্স ২৬ রানে এবং নাথান লায়ন ৮ রান করে অপরাজিত আছেন।
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া এর স্কোরবোর্ড
শ্রীলঙ্কা (১ম ইনিংস) – ২১২/১০ (৫৯.০)
অস্ট্রেলিয়া (১ম ইনিংস) – ৩১৩/৮ (৬৯.০)
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের একাদশ
শ্রীলঙ্কা | দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকভেলা (উইকেট রক্ষক), পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দিনেশ চান্ডিমাল, রমেশ মেন্ডিস, লাসিথ এমবুলদেনিয়া, জেফরি ভ্যান্ডারসে এবং অসিথা ফার্নান্দো। |
অস্ট্রেলিয়া | প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেট রক্ষক), উসমান খাজা, মারনাস লাবুশেন, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, ক্যামেরন গ্রিন, ট্র্যাভিস হেড, মিচেল স্টার্ক, মিচেল সোয়েপসন এবং নাথান লায়ন। |