
চারদিকে পাহাড় ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাশ্মীরের কথা শোনেননি এমন লোক নেই বললেই চলে। চারদিকে উঁচু – নিচু পাহাড়ের সৌন্দর্যের মধ্যে ক্রিকেট খেলাটা যে কত শান্তির ব্যাপার এটা তিনিই বুঝতে পারবেন যিনি এই সৌন্দর্যের মধ্যে খেলেছেন। আর এবার বিপিএলেই আছেন এমন এক ব্যক্তি, যিনি উঠে এসেছেন কাশ্মীরের পাহাড় ডিঙিয়ে। তিনি আর কেউ নন, তিনি বিপিএলের নতুন সেনসেশন সালমান ইরশাদ।
বিপিএলের এই আসরে সালমান আছেন ঢাকা ডমিনেটরসে। মাঠে নামার আগে অনুশীলনে প্রচুর ব্যস্ত সময় কাটান ছয় ফুট উচ্চতার এই ক্রিকেটার। আর অনুশীলন মাঠে বসেই তিনি গণমাধ্যমকে শুনিয়েছেন তার জীবনের গল্প। জন্মস্থান কাশ্মীরকে নিয়ে সালমান বলেন, ” কাশ্মীরকে বলা হয় সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ওটা আসলে জান্নাত। চারদিকে পাহাড়, তুষার ঝড়, তবে সবকিছু ছাড়িয়ে সেখানে জীবনটা উপভোগের । ওখানে চারটা মৌসুম, পাহাড়ের মাঝে ক্রিকেট ও খেলা হয়। কাশ্মীরের জীবন, ক্রিকেট সবই উপভোগ করি। ক্রিকেটের হাতেখড়ি সেখানেই “।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছেন তিনি। তবে তার মন ছিলো ক্রিকেটেই। সেই গল্পও বাংলাদেশের মিডিয়াকে জানিয়েছেন সালমান ” ক্রিকেট নিয়ে আমার সব সময়ই আগ্রহ ছিলো। লাহোর কালান্দার্স একটা ট্রায়ালের আয়োজন করলো। সেখানে যাওয়ার মন স্থির করলাম। ৩৫ হাজার মানুষ সেখানে গিয়েছিলো। ৩৫ হাজারের ভেতর একজনকেই নেওয়া হয়েছিল, আর সেটা আমি।
৩৫ হাজার ছেলেকে পেছনে ফেলে এই পরীক্ষায় কিভাবে উত্তীর্ণ হলেন তিনি? সেই গল্পও শুনিয়েছেন সালমান ” সব সময় জোরে বল করতে পছন্দ করতাম। আমার বলে অনেক গতি ছিল। স্পিড মিটারে আমার গতি ছিল ১৪৫ কিলোমিটার। এটাই আমাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিলো। আমাকে বাছাই করেছিলেন পাকিস্তানের , আকিব জাভেদ। দিনটা আমার জন্য ভীষন স্মরণীয় ছিলো “।
ক্রিকেটের জন্যই বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছেন সালমান। অস্ট্রেলিয়ায়ও গিয়েছিলেন তিনি। লাহোর কালান্দার্স তাকে নিয়ে গিয়েছিল। আর সেখানে গিয়ে তার সৌভাগ্য হয়েছিল বিরাট কোহলির মতো বড় তারকা ক্রিকেটারকে নেটে বল করার। সালমান বলেন, ” পৃথিবীজুড়েই বিরাট কোহলি ক্রিকেটে বড় এক তারকা। অন্যদের মত আমিও তার অনেক বড় ভক্ত। ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে কোহলি তখন এক নম্বর ব্যাটার। তাকে যখন নেটে বল করার সুযোগ এলো, বিশ্বাস হচ্ছিলো না৷ রোমাঞ্চকর মুহুর্ত ছিল ওটা “৷ পাকিস্তান প্রিমিয়ার লিগে প্রথম বলেই মিসবাহ উল হককে বোল্ড করেছিলেন সালমান। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলে ছক্কা মেরেছিলেন মোহাম্মদ সামিকেও। “
সালমানের স্বপ্ন একদিন কাশ্মীর থেকে অনেক ক্রিকেটার উঠে আসবেন। তিনি বলেন, ” কাশ্মীরে প্রতিভার অভাব নেই। তবে মাঠের অভাব, চারদিকে শুধু পাহাড়। সমতল জায়গাই কম। সুযোগ পেলে আর সঠিক নির্দেশনা পেলে কাশ্মীরের ক্রিকেটাররাও ভালো করবে। কাশ্মীর থেকেও আরও অনেক দারুন ক্রিকেটার দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব “। কাশ্মীরের ছেলেদের কাছে সালমান এখন বড় এক অনুপ্রেরণার নাম। তবে বিপিএল খেলতে এসে মুগ্ধ এই তরুন
ক্রিকেটার। সালমান আরো বলেন ” এখানে খেলতে এসে দারুন লাগছে৷ বিপিএলে নিজেকে প্রমান করতে মুখিয়ে আছি৷ অনেক নামি-দামি ক্রিকেটারদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ থাকছে। বিপিএল জার্নিটা দারুন। এখানে খেলতে আসায় এই লিগ নিয়ে কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। “