
প্রথমে ব্যাট হাতে হাঁকালেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। পরে বোলিংয়ে নেমে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ৪ উইকেট। হার্দিক পান্ডিয়ার এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পর ন্যুনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি স্বাগতিক ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল।
সাউদাম্পটনের রোজ বলে হার্দিকের ফিফটির সঙ্গে দীপক হুদা ও সুর্যকুমার যাদবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৯৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত। জবাবে হার্দিকের বোলিং তোপে ১৪৮ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। যার সুবাদে ৫০ রানের জয়ে লিড নিয়েছে ভারত।
সাউদাম্পটনে টসে জিতে ভারত শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মাই দ্রুত রান তুলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পথ দেখান। তাঁর ১৪ বলে ২৪ রানের ইনিংসটি ভারতের পাওয়ারপ্লের ভিত গড়ে দেয়।
ইংল্যান্ডের নবনিযুক্ত অধিনায়ক বাটলার উইকেটের আশায় পাওয়ারপ্লেতেই মঈন আলীকে বোলিংয়ে আনেন। রান দিলেও মঈনকে মারতে গিয়ে আউট হন রোহিত (২৪) ও আরেক ওপেনার ঈশান কিষান (৮)।
তবে রানের গতি তাতে কমেনি। আয়ারল্যান্ড সফর থেকে দারুণ ছন্দে থাকা দিপক হুদা ওভারপ্রতি ১০ এর বেশি রান রেট বজায় রাখেন। চারে নামা সূর্যকুমার যাদবও রান তুলেছেন দ্রুত। দুজনের জুটি ২৩ বলে ৪৩ রান যোগ করে।
দুই শ স্ট্রাইক রেটের এই জুটি ভাঙতে অভিজ্ঞ ক্রিস জর্ডানকে নবম ওভারে বোলিংয়ে আনেন বাটলার। স্লোয়ার বলের ফাঁদে ফেলে হুদাকে সেই ওভারেই আউট করেন জর্ডান। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৩৩ রান করেন হুদা। ১২তম ওভারে আবারো জর্ডানের আঘাত, এবার শিকার সূর্যকুমার যাদব। ১৯ বলে ৩৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন তিনি।
জর্ডান মাঝের ওভারে চেপে ধরলেও এরপর অবশ্য দাপটটা দেখিয়েছে ভারতই। তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন পান্ডিয়া। ৩৩ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংস খেলে রানের চাকা সচল রাখেন এই অলরাউন্ডার। শেষের দিকে অক্ষর প্যাটেল (১৭) ও দীনেশ কার্তিকের (১১) সৌজন্যে ভারত শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৯৮ রান তোলে।
৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করা জর্ডান ছিলেন ইংল্যান্ডের সেরা বোলার। তাছাড়া মঈন আলী নিয়েছেন ২টি উইকেট এবং রিস টপলে, ম্যাথু পারকিনসন, টাইমাল মিলস প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট নেন।
ইংল্যান্ডের ইনিংসে প্রথম ধাক্কাটা দেন ভুবনেশ্বর কুমার ও হার্দিক পান্ডিয়া। দুজনের শুরুর স্পেলে মাত্র ৩৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। জস বাটলার গোল্ডেন ডাকে আউট হন। জেসন রয় ৪, ডেভিড মালান ২১ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ফেরেন ০ রানে।
প্রথম চার ব্যাটারের তিনজনকেই ফেরান হার্দিক। এরপর হ্যারি ব্রুক ও মইন আলি প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে গড়েন ৬১ রানের জুটি। কিন্তু কখনও জেতার মতো সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি তারা। মইন ২০ বলে ৩৬ ও ব্রুক খেলেন ২৩ বলে ২৮ রানের ইনিংস।
পরে ক্রিস জর্ডান ১৭ বলে ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে দেড়শর কাছাকাছি নিয়ে যান। যা স্রেফ পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে।
ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ৩৩ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন হার্দিক। এছাড়া আর্শদীপ ও যুজবেন্দ্র চাহালের শিকার দুইটি করে উইকেট। এছাড়া হার্ষাল প্যাটেল এবং ভুবনেশ্বর কুমার দুইজনই একটি করে উইকেট পান।
ইংল্যান্ড বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড
ভারত – ১৯৮/৮ (২০.০)
ইংল্যান্ড – ১৪৮/১০ (১৯.৩)
ফলাফল – ভারত ৫০ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – হার্দিক পান্ডিয়া
ইংল্যান্ড বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ
ইংল্যান্ড | জস বাটলার (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), ডেভিড মালান, জেসন রয়, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলী, স্যাম কুরান, হ্যারি ব্রুক, টাইমাল মিলস, ক্রিস জর্ডান, ম্যাথু পারকিনসন, রিস টপলে |
ভারত | রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), দিনেশ কার্তিক (উইকেটরক্ষক), দীপক হুডা, ইশান কিষাণ, হার্দিক পান্ডিয়া, সূর্যকুমার যাদব, হার্ষাল প্যাটেল, অক্ষর প্যাটেল, আর্শদীপ সিং, ভুবনেশ্বর কুমার, যুজবেন্দ্র চাহাল |